ASANSOL

রানীগঞ্জে গাছ কেটে পাচারের অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, রানীগঞ্জ: রানীগঞ্জের ধ্বস গ্যাস প্রবন খনি এলাকা হিসেবে পরিচিত অমৃত নগর কোলিয়ারি এলাকায় এবার ঝড় বৃষ্টির নামে গাছ পড়ে যাওয়ার ছুঁতোয় গাছ কেটে পাচারের অভিযোগ উঠল এলাকার একদল অসাধু চক্রের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় বেশ কয়েকদিন ধরেই কালবৈশাখীর ঝড় বৃষ্টির কারণে এলাকার বন বিভাগের পক্ষ থেকে লাগানো বেশকিছু গাছপালা ঝড়ে ভেঙে পড়ে। এগারা গ্রাম পঞ্চায়েতের অমৃত নগর কলীয়ারি এলাকাতে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গ্যাস ও মৃত্তিকা ক্ষয় রোধের লক্ষ্যে বনবিভাগের আধিকারিকেরা বিস্তীর্ণ অংশে নিবিড় বনসৃজনের উদ্যোগ নেন।

দীর্ঘ কয়েক বছর আগে লাগানো সেই গাছগুলি আজ বৃক্ষে পরিণত হয়েছে, সেই সকল গাছগুলির একটি বড় অংশ, গত কয়েকদিনের কালবৈশাখীর ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ার বিষয় কে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর পাচার চক্র সেই গাছগুলিকে কেটে তা বাইরে পাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা। অনেকেরই দাবি খনি আবাসনের বিভিন্ন বাড়িঘরে গাছ পড়ে যাওয়ার পর সেই গাছ সরিয়ে দেওয়ার নাম করে গাছগুলিকে বাইরে পাচার করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ এলাকারই তৃণমূল নেতার, তার দাবি ঝড় বৃষ্টির কারণে গাছ বাড়িতে পড়ে যাওয়াতেই সেই গাছ কেটে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, গাছ পাচারের অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বনবিভাগের আধিকারিক খনি আধিকারিক ও সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দপ্তরের সদস্যরা তদন্তে নামেন, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আগামীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।

এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায় বেশ কিছু পুরনো মূল্যবান গাছ ঝড়ে পড়ে না গেলেও, সেসব গাছগুলিকে নির্দ্বিধায় কেটে নিয়েছে পাচার চক্রের লোকেরা, এলাকার বাসিন্দাদের দাবি এভাবে ঝড় বৃষ্টি নামে শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য ব্যাপক পরিমাণ বৃক্ষচ্ছেদন করা হয়েছে যার জেরে এলাকাটি যেকোনো মুহূর্তে বিপদজনক হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই এলাকার একটি বিস্তীর্ণ অংশে ধ্বস ও গ্যাসের কারণে বিপদ পূর্ণ হয়ে ওঠে ,বাসিন্দারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সে সময় ইসিএল কর্তৃপক্ষ বিস্তীর্ণ এলাকা ঘিরে দিয়ে ছাই চাপা দিয়ে কোনোক্রমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের আরও এক দফায় ইসিএলের খেলার মাঠের পাশে, বারুদ ঘরের আশেপাশের বিস্তীর্ণ অংশে, খনি আবাসন এলাকায়, ব্যাপকভাবে বৃক্ষ ছেদন করতে দেখা গেছে। যার ফলে এলাকায় আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেই আশঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা। এলাকাটি অত্যন্ত ধ্বস ও গ্যাস প্রবণ এলাকা হওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে পরিবেশে নিবিড় বৃক্ষ রোপণের কারণে সমগ্র এলাকায় গ্যাসের আতঙ্ক অনেকটা রোখা গেছে। কিন্তু এবার ফের এভাবে বৃক্ষছেদন করায় ধ্বস গ্যাসের আতঙ্ক অনেকটাই বাড়তে পারে বলেই অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।

Leave a Reply