ASANSOLKULTI-BARAKAR

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে গন্ডগোল, প্রাক্তন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সালিশি সভায় যুবককে চটি পেটা করার অভিযোগ, ভাইরাল ভিডিও

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, কাজল মিত্র ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটির রানিতলায় প্রাক্তন কাউন্সিলর নাজনিন বেগম ও তার স্বামী খুরশিদ আনোয়ারের উপস্থিতিতে এক সালিশি সভায় এক যুবককে জুতো পেটা ও থুতু চাটানোর অভিযোগ উঠলো। শনিবার এই ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা,নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে।

জানা গেছে, আসানসোল পুরনিগমের বর্তমান ৭১ নং ওয়ার্ডের ( পুরনো কুলটি পুরসভার ২৪ নং ওয়ার্ড) কুলটির রানীতলায় এক যুবকের সঙ্গে এক যুবতীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ উঠে। এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর প্রাক্তন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে এক সালিশি সভা ডাকা হয়। সেই সভা হয় নাজনিন বেগমের বাড়িতেই। অভিযোগ এরপর প্রেমিকা দিয়ে ওই অভিযুক্ত যুবককে জুতো পেটা করা হয়েছে।এমনকি থুতু ফেলে সেই থুতু অভিযুক্ত যুবককে দিয়ে চাটা করা হয়েছে। এই দৃশ্য সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এর পেছনে শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের মদত রয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করে।

যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার শাসক দলের কুলটি ব্লকের নেতৃত্ব। যদিও ভিডিওতে ঐ এলাকার বেশ কয়েকজন যুবককে দেখা যায়, যারা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বলে পরিচিত।
জানা গেছে, নাজনিন বেগম পুর ভোটে নির্দল প্রার্থী হয়ে জিতেছিলো। পরে সে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করে। এবারের পুর ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিট না পেয়ে, আবার নির্দল প্রার্থী হয়। কিন্তু হেরে যায়। তার স্বামী এলাকায় কংগ্রেসের নেতা বলে পরিচিত।

স্পষ্ট করে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সবুজ রঙের হাফ টি শার্ট ও নীল রঙের জিন্স পরা এক যুবককে মাটিতে বসে আছে। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, মাটিতে বসা যুবকের নাম হচ্ছে সমীর রাজা। সমীর রাজা ঐ এলাকার বাসিন্দা। সে তিনি বিবাহিত ও তার একটি সন্তানও রয়েছে বলে এলাকার বাসিন্দারা বলেন । এই ভিডিওতে আরো দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলাকে কালো বোরখা পড়ে হাতে চটি বা চপ্পল নিয়ে সমীরকে মার দেখা যাচ্ছে। আরো জানা গেছে, মারমুখী এই মহিলাও এই এলাকার বাসিন্দা। এই মহিলা ও সমীরের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে প্রেমের বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু পরে কোন কারণে তা ভেঙে যায়। এরপর সমীর ব্ল্যাকমেল করছে বলে অভিযোগ নিয়ে পরে ঐ মহিলা প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তার স্বামীর কাছে বিচার চাইতে যায়।

এরপর বিষয়টি এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তার স্বামী এলাকার অনুগামীদের নিয়ে একটি খাপ পঞ্চায়েত বা সালিশি সভা বসায়। সেখানে দুজনকেই ডাকা হয়। এলাকায় কেউ যেন আর এ ধরনের কাজ না করে, তার জন্য সবার সামনে মহিলাকে দিয়ে যুবককে চপ্পল মারতে বলা হয়। শুধু তাই নয়, মহিলাকে প্রকাশ্যে মাটিতে থুথু ফেলতে বলা হয়। একইভাবে সবার সামনে জোর করে সেই থুথু চাটানো হয়েছে বলে দাবি ও অভিযোগ। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তার স্বামীর কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
কুলটি থানার পুলিশ জানায়, একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু কোন অভিযোগ নেই। অভিযোগ এলে তদন্ত করে দেখা হবে।

Leave a Reply