ASANSOL

কয়লা পাচার মামলা : সিআইডির হাতে ধৃত দুই ব্যবসায়ীর জামিনের শুনানি আগামী ৩১ আগষ্ট

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়ায় কয়লা উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যবসায়ী আব্দুল বারিক বিশ্বাসের জামিনের শুনানি দুদিন পিছিয়ে গেলো। আগামী ৩১ আগষ্ট আবার হবে এই শুনানি । সোমবার আসানসোল আদালতের সিজিএমের এজলাসে বারিক বিশ্বাসের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী শেখর কুন্ডু। কিন্তু সিআইডির তরফে এদিন এই মামলার সিডি বা কেস ডায়েরি জমা দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে সিজিএম তরুণ কান্তি মন্ডল সিআইডির আইনজীবী মনোজ সিংয়ের কাছে কারণ জানতে চান। তখন আইনজীবী বলেন, পরের দিন তা জমা দেওয়া হবে। এরপর সিজিএম নির্দেশ দেন যে, আগামী ৩১ আগষ্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।


প্রসঙ্গতঃ, এই কয়লা পাচার কাণ্ডে তদন্তে নেমে রাজ্য পুলিশের সিআইডি আগেই হরিয়ানার ব্যবসায়ী সঞ্জয় মালিক ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার বসিরহাটের ব্যবসায়ী আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছিলো। এই দুজনই কয়লার পাশাপাশি গরু পাচার মামলায় গত মঙ্গলবার থেকে বসিরহাট পুলিশের কাছে ৬ দিনের হেফাজতে রয়েছে আদালতের নির্দেশে। সোমবারই তাদের সেই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে, সঞ্জয় মালিককে অন্ডালের কয়লা চুরির মামলায় দুর্গাপুরের আদালত থেকে যে জামিন দেওয়া হয়েছিল তাকে চ্যালেঞ্জ করেছে সিআইডি। সিআইডি ঐ ব্যবসায়ীকে প্রভাবশালী বলে জামিন খারিজের দাবি জানায়।


এর আগের দিনের শুনানিতে সঞ্জয়ের আইনজীবী শেষাদ্রি দুবে বলেন, আমাদের কাছে সিআইডির দাবির স্বপক্ষে কোন কাগজ নেই। সেটা আগে দেওয়া হোক । তারপর শুনানি হোক। সেই মতো সেদিন বিচারক নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, আগামী সোমবার এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে।
এদিন সেইমতো দূর্গাপুরের আদালতে এই শুনানি হয়। শুনানিতে সওয়াল-জবাব শেষে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রায় দান স্থগিত রাখেন। তিনি একইসঙ্গে নির্দেশ দেন যে, আগামী ৩১ আগষ্ট এই নিয়ে আবার শুনানি হবে।
এর আগে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের জামুরিয়া, অন্ডাল ও বারাবনি থানার নির্দিষ্ট তিনটি কয়লা চুরির কেসে আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আব্দুল বারিক বিশ্বাস ও সঞ্জয় মালিকের নাম পায় সিআইডি।
হরিয়ানার বাহামগড় থানার কামারপুরে একটি ফার্ম হাউসের থেকে গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয় মালিককে সিআইডি আগেই দু সপ্তাহ হেফাজতে নিয়েছিলো।


সিআইডি তরফে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বারাবনির চরণপুর রেল সাইডিং এলাকা থেকে ১৮১৭ মেট্রিক টন চোরাই কয়লা ইসিএলের অভিযোগের ভিত্তিতে বারাবনি পুলিশ আটক করেছিল। এই কয়লা তখন রেলের মাধ্যমে অবৈধভাবে পাচারের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই খবর পেয়ে ইসিএল আধিকারিকরা সেখানে পৌঁছান। কোন সঠিক কাগজপত্র না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই কয়লা গুলি তারা উদ্ধারের জন্য বারাবনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ইসিএলের অভিযোগের ভিত্তিতে বারাবনি থানার পুলিশ একটি মামলা ( নং ১২৭) করে। ঐ কেসে তখন কেউ গ্রেফতার না হলেও সিআইডি এই কেসে সঞ্জয় ও বারিক সহ এখনো পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। একইভাবে জামুরিয়ায় এক গাড়ি থেকে আড়াই কোটি টাকা উদ্ধার ও জঙ্গল থেকে ৪৫ টন কয়লা উদ্ধার এবং অন্ডালের একটি কয়লার মামলার তদন্ত করছে ।

Leave a Reply