ASANSOLKULTI-BARAKAR

নিয়ামতপুরে ৪ বছরের সন্তানকে নিয়ে পরিত্যক্ত চানকে ঝাঁপ গৃহবধূর

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ সাতসকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে চার বছরের সন্তানকে নিয়ে ইসিএলের পরিত্যক্ত খনি চানকে ঝাঁপ দিলেন এক গৃহবধূ। বুধবার সকালে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের বামুনডিহার মাদ্রাসা পাড়ায় এই ঘটনাটি ঘটে। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। পরে আসেন আসানসোল দমকল বিভাগের কর্মী ও ইসিএলের উদ্ধারকারী দল। প্রথমে সকাল এগারোটা নাগাদ চানকে দড়ির সঙ্গে কাঁটা ফেলে চার বছরের সুমিত ঠাকুরকে উদ্ধার করা হয়। এরপরে আরো ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ উদ্ধার করা হয় ২৫ বছরের সুমন ঠাকুরকে । দুজনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে এমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষনা করেন।


জানা গেছে, বছর ৬ আগে বর্ধমানের বুদবুদের বাসিন্দা সন্তোষ ঠাকুরের সঙ্গে কুলটি থানার নিয়ামতপুরের বামুনডিহা মাদ্রাসা পাড়ার সুমন ঠাকুরের বিয়ে হয়েছিলো। সুমন ঠাকুরের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত বৃহস্পতিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টের ভিত্তিতে করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তবে এদিন বিকেলে সুমিত ঠাকুরের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পরে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র পারিষদ তথা আসানসোল পুরনিগমের ৬০ নং ওয়ার্ডের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী মিশ্র।


সুমন ঠাকুরের দাদা শচীন ঠাকুর বলেন, বোন কেন এই রকম কেন করলো বুঝতে পারছি না। মঙ্গলবার রাতে সে শ্বশুরবাড়িতে থাকা স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলো। এদিন সকালে যখন বাড়ি থেকে বেরোও, তখন কোন অস্বাভাবিকতা দেখিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অন্যদিনের মতো এদিন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নিজের ছেলে সুমিত ও দুই ভাইপোকে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বেরোয় সুমন ঠাকুর। ঘন্টা খানেক পরে সে ভাইপোদের বাড়ি ফিরে যেতে বলে। সুমন তাদেরকে বলে, সে একটু পরে আসছে। কিন্তু সকাল সাতটা বাজার পরেও সুমন ছেলে নিয়ে বাড়ি ফিরে না আসায় বাড়ির লোকেরা তার খোঁজ শুরু করেন। এলাকায় সব খোঁজার পরে বাড়ির লোকেরা ঐ এলাকায় কিছুটা দূরে ইসিএলের একটা পরিত্যক্ত খনি চানকের কাছে যান। সেখানে তারা দেখেন সুমনের চটি রয়েছে। তারা বুঝতে পারেন যে, কিছু একটা হয়েছে। এরপর এলাকার বাসিন্দারা নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে খবর পাঠান ও নিজেরা চানকের মধ্যে দড়ির সঙ্গে কাঁটা ফেলে তল্লাশি শুরু করেন। ততক্ষণে এলাকায় পুলিশের সঙ্গে এসে পৌঁছায় আসানসোল থেকে দমকলকর্মী ও ইসিএলের উদ্ধারকারী দল। এরপর একে একে চানকের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় মা ও ছেলেকে।


প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, কোন কারণে মানসিক অবসাদগ্রস্থ হয়েই সুমন ঠাকুর তার ৪ বছরের সন্তানকে নিয়ে ইসিএলের পরিত্যক্ত চানকে ঝাঁপিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবারের তরফে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয় নি। যদি করা হয়, তাহলে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশ জানায়।

Leave a Reply