ASANSOL

সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদের পর, ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিলেন ইসিএলের টাস্ক ফোর্সের প্রাক্তন প্রধান

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ কয়লা পাচার ও অবৈধ কয়লা খনন নিয়ে রাজ্য পুলিশের সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদের পরে সিআরপিসির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিলেন ইসিএলের টাস্ক ফোর্সের প্রাক্তন প্রধান তথা কয়লাখনি এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তদানীন্তন অন্যতম আধিকারিক মেজর রাজা পাল।


রাজ্য পুলিশের সিআইডি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের পাশাপাশি আসানসোল রানিগঞ্জ কয়লা খনি এলাকায় পাঁচটি কয়লা চুরির মামলায় তদন্ত শুরু করেছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো বারাবনির থানার চরণপুর রেল সাইডিংয়ে ২০১৯ সালের ১৮১৭ টন চোরাই কয়লা উদ্ধারের ঘটনা। এই চোরাই কয়লা উদ্ধার হওয়ার ঘটনা অভিযোগ আকারে তখন ইসিএলের টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে বারাবনি থানায় দায়ের করা হয়েছিল। সেই সময় অভিযোগের পরেও বারাবনি থানার পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে বলে জানা যায়।


চলতি বছরে সিআইডি সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই হরিয়ানা থেকে সঞ্জয় মালিক, বসিরহাটের আব্দুল বারিক বিশ্বাস সহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও সিআইডি জামুরিয়া, রানিগঞ্জ ও অন্ডাল থানার একাধিক কয়লা চুরির মামলায় তদন্ত শুরু করেছে।
সেই সময় ইসিএলের টাস্কফোর্সের অন্যতম প্রধান হিসেবে মেজর রাজা পাল ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গের ইসিএলের বিভিন্ন কয়লা খনি থেকে অবৈধ খনন বন্ধ করা ও চোরাই কয়লা উদ্ধার করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি টাস্ক ফোর্সের প্রধান হিসাবে প্রচুর সংখ্যায় অভিযোগ বিভিন্ন মহল ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে করেছিলেন। এমনকি বিষয়টি তিনি হাইকোর্ট পর্যন্ত নিয়ে গেছিলেন।


এখন সিআইডি সেই কয়লা চুরি তদন্তে নেমে মেজর রাজা পালকে চার দিন আগে কলকাতায় ভবানী ভবনে ডেকে পাঠায়। তাকে গোটা বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডির অফিসাররা। বিশেষ করে তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়, বারাবনির ১৮১৭ টন কয়লা উদ্ধার ছাড়াও ইসিএলের বিভিন্ন খনি থেকে বা লিজহোল্ড এলাকা থেকে কিভাবে কয়লা চুরি হতো ও সেই কয়লা কোথায় পাচার হতো? তখন বিভিন্ন থানার পুলিশের কি ভূমিকাই বা ছিল? এই বিষয়গুলো নিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া উত্তর রেকর্ডিংও করা হয়।


এরপর সিআইডি আবেদনের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার আসানসোল জেলা আদালতে তৃতীয় বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মেজর রাজা পাল প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে কয়লা চুরির বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে গোপন জবানবন্দি দেন। সেই জবানবন্দী সিল করে তা যথাযথ জায়গায় পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
এদিন এই প্রসঙ্গে রাজা পাল বলেন, সিআইডি তাকে কয়লা চুরি এবং সেই সময় পুলিশ সহ অন্যান্যদের তখনকার ভূমিকা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। আর এদিন আমি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি গোপন জবানবন্দি দিলাম। তাতে অবশ্য তিনি কি বলেছেন তা জানাতে চাননি ।
প্রসঙ্গতঃ, মেজর রাজা পাল এখন ইসিএলে নেই। তিনি বদলি হয়ে এই মুহুর্তে মধ্যপ্রদেশে কোল ইন্ডিয়ার অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ব কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থায় কর্মরত আছেন।

Leave a Reply