ASANSOLASANSOL-BURNPUR

অবৈধ বালি পাচারের বিরুদ্ধে বিজেপির কর্মীদের ধর্ণা, অবরোধ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, উত্তেজনা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ অবৈধ বালি পাচারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন ডাক দিলেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। দামোদর নদী ড্রেজিং করার নামে বেআইনি ভাবে বালি পাচার ও ওভারলোড বালি গাড়ি বন্ধ ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দাবিতে শুক্রবার বিকেলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের চিত্রা মোড়ে দলের নেতা ও কর্মীদের নিয়ে ধর্ণা অবস্থানে বসেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। অন্যদের মধ্যে ছিলেন প্রশান্ত চক্রবর্তী, মিঠু ওরফে সুব্রত ঘাঁটি, বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় ও আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলর আশা শর্মা।

বিজেপির এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যাতে এলাকায় কোন সমস্যা না হয়, তার জন্য চিত্রা মোড়ে প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিলো। তবুও শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার সময় চিত্রা মোড়ে রাস্তা অবরোধ করা নিয়ে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের কথা বচসা ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে শ্লোগান ও বার্ণপুরের রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই গাড়ি না যেতে দেওয়ার দাবি নিয়ে বিজেপি নেতা ও কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করতে যান। পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়। তখন অগ্নিমিত্রা পাল দলের নেতা ও কর্মীদের নিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধঘন্টা ধরে তা চলে। শেষ পর্যন্ত ছটা নাগাদ পুলিশ এই ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে রাস্তা অবরোধ তোলে। এরপর এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ করেন বিধায়ক। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করে।


এদিনের আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিজেপি বিধায়ক বেআইনি বালি, কয়লা, গরু ও পাথর নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও মন্ত্রীদের কড়া ভাষায় আক্রমণ ও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, রাজ্যে মদ খেয়ে মৃত্যু হলে রাজ্য সরকার ২ লক্ষ টাকা করে দেয়। আর ওভারলোড বালি বোঝাই ডাম্পারে পিষে মৃত্যু দুজনের জীবনের দাম মাত্র ৬ লক্ষ টাকা? তাও সেটা করা হলো হিরাপুর থানায় বসে ঠিক করে। বেআইনি কারবার ও চুরি যেখানে তৃনমুল কংগ্রেস সেখানে। তৃনমুল কংগ্রেসের ৯৯ শতাংশ নেতা এরসঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিজেপি বিধায়ক সমালোচনার সুরে বলেন, সেদিনের ঘটনা যে দুজন যুবকের মৃত্যু হয়েছে, তারা আমার বিধান সভা এলাকার বাসিন্দা হলেও, যতদূর জেনেছি তারা তৃনমুল কংগ্রেসের কর্মী।

তাদের মৃত্যুর পরে কোন তৃনমুল কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্বকে তাদের পরিবারের পাশে দেখা গেছে? তারা বেআইনি কারবার থেকে টাকা কামাতে ব্যস্ত। আর পুলিশ প্রশাসন সব জেনেও কোন কিছু করছে না। দামোদর নদীতে ড্রেজিং করার নামে টন টন বালি তুলে পাচার করা হচ্ছে এই বার্ণপুরের রাস্তা দিয়ে। ইস্কো রাস্তা তৈরি করেছে। আর সেই রাস্তা দিয়ে ওভারলোড বালি বোঝাই শয়ে শয়ে গাড়ি যাচ্ছে। ফলে রাস্তা ভেঙেচুড়ে গেছে। প্রতিদিন ঘটনা ঘটছে। পুলিশ সব দেখছে। কিন্তু কিছু করছে না।


বিজেপি বিধায়ক এদিন হুমকি দিয়ে বলেন, এই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই কোন গাড়ি চলাচল করতে দেবো না। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করছিলাম না। তখন এক পুলিশ অফিসার আমাদের সেই আন্দোলন ভেস্তে দিতে জোর করে তা তোলার চেষ্টা করেন। মারধর করা হয় দলের কর্মীদের। তখন আমরা রাস্তায় বসে পড়ি। আমারকে হিরাপুর থানার ওসি ও সিআই আশ্বাস দিয়েছেন যে এই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই গাড়ি চলাচল করবে না। সেই আশ্বাস রাস্তা অবরোধ তুলে নিয়েছি। আমরা দেখবো পুলিশ সেই আশ্বাস রাখছে কি না। যদি দেখি এরপরও চলছে। তাহলে তারপর ঐসব গাড়ির কি করতে হয় তা দেখাবো।

Leave a Reply