ASANSOL

আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ জামতাড়া গ্যাংয়ের থেকে উদ্ধার করল প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা

সাইবার অপরাধ আটকাতে বিশেষ পদক্ষেপ আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট চলছে সচেতনতার অভিযান

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ আটকাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। সাইবার অপরাধীদের ফাঁদে যাতে সাধারণ মানুষেরা পা না দেন তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে চলছে লাগাতার সচেতনতার প্রচার। পড়ুয়াদের মাধ্যমে যাতে একবারে এই সাইবার অপরাধের বিপদ সম্পর্কে অবহিত করা যায়, তারজন্য বলতে গেলে বছরভর পুলিশের পক্ষ থেকে স্কুলে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলে বিশেষ শিবির।


আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়েছে বিশেষ সাইবার অপরাধ আটকাতে থানা। রয়েছেন পুলিশ অফিসাররা।
কিন্তু এতো কিছুর পরেও ” আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট ” এলাকায় ” জামতাড়া গ্যাং” য়ের দৌরাত্ব যে একটুও কমেনি, তার প্রমান সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান।


পুলিশের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সাইবার অপরাধের মাধ্যমে খোয়া যাওয়া প্রায় ৭৯ লক্ষ ৮৯ হাজার ৯৪৭ টাকা উদ্ধার করেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে গত আগষ্ট মাসে। আরো জানা গেছে, প্রতি মাসে এই জামতাড়া গ্যাংয়ের শিকার হয়ে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষেরা। প্রতি মাসেই একাধিক অভিযোগ জমছে সাইবার থানায়। নতুন নতুন কৌশল বা পন্থা অবলম্বন করে অপরাধীরা প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের সচেতনতায় বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


বলা হয়েছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, এটিএম কার্ড নম্বর, সিভিভি নম্বর, পিন বা কোনও ওটিপির মতো ব্যক্তিগত বিবরণ কোন অজানা ব্যক্তির সাথে শেয়ার করবেন না। গুগলে গিয়ে কখনই কোন কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার নম্বর অনুসন্ধান করবেন না। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটগুলিতে যান, সেখান থেকে তথ্য ও নম্বর নিন। কোনভাবেই অপরিচিত কারোর কাছ থেকে কোনো বন্ধুর অনুরোধ বা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বা ভিডিও কল গ্রহণ বা এক্সেপ্ট করবেন না। এছাড়াও বলা হয়েছে ইন্টারনেটে কোন কিছুই বিনামূল্যে/সস্তা এমন কিছুর ফাঁদে পড়বেন না। যা টাকা হারানো বা সামাজিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

পুলিশের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে এই সাইবার অপরাধীরা নতুন ধরনের প্রতারনার রাস্তা নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জাল বিদ্যুৎ গ্রাহক সেবা ফেক ইলেকট্রিসিটি কাস্টমার কেয়ার কলিং, বিদেশ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কল বা বন্ধুত্বের অনুরোধ। এছাড়াও রয়ে হোয়াটসঅ্যাপ বা ম্যাসেঞ্জারে পরিচিত বা স্বনামধন্য ব্যক্তির জাল পরিচয় ব্যবহার করে উপহার দেওয়ার নামে টাকা দাবি করা।


পুলিশের দেওয়া তথ্য সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারিতে ২, ৩২, ৪৩৮ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে, ৪, ৫৫, ৯৩৫ টাকা, মার্চে ৮, ০০, ৪৬৮ টাকা, এপ্রিলে ৬, ১৭, ৫৯৫ টাকা, মে মাসে ৩, ৪১, ৪৬৭ টাকা, জুনে, ৫, ৬৭, ৬৬৭ টাকা, জুলাইয়ে, ৬, ৯৪, ৫৩৫ টাকা, আগস্টে, ২০, ০৪, ৩৬১ টাকা, সেপ্টেম্বরে, ৬, ৪০, ৪০৫ টাকা, অক্টোবরে ১৫, ২৭০, ০৭৬ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশের তরফে বলা হয়েছে চলতি নভেম্বর ৯ তারিখ বা বুধবার পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে, ১ লক্ষ ৮ হাজার টাকা।


এই প্রসঙ্গে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ডাঃ কুলদীপ সোনেয়াল বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সবসময় এই সাইবার অপরাধ নিয়ে সর্বস্তরে সচেতন করা হচ্ছে। অপরাধ হওয়ার পরে, তার অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ পদক্ষেপ নেয়। আমরা বলছি, কেউ কোন ফাঁদে পড়বেন না।

Leave a Reply