ASANSOL

জেলার পঞ্চায়েত এলাকার কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ, দলের বিধায়ক ও নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক, বিতর্কে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত রাজ রাষ্ট্র মন্ত্রী

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ রাজ্য সরকারের সরকারি অতিথিশালা আসানসোল সার্কিট হাউসে শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের বিধায়ক ও নেতাদের সঙ্গে নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পঞ্চায়েত এলাকার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করে বিতর্কে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত রাজ দপ্তরের রাষ্ট্র মন্ত্রী কপিল মহেশ্বর পাতিল। এই বৈঠকের পরে মন্ত্রী দলের বিধায়ক ও নেতাদের সামনেই সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পঞ্চায়েত এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ঠিক মতো না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এই নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস বিজেপিকে আক্রমণ করেছে।


মন্ত্রী বলেন, এদিন জেলার স্বচ্ছ ভারত মিশন, ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ফিফটিন ফিনান্স কমিশনে যে পরিমান কাজের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিলো তার মধ্যে এই জেলায় চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ৮ মাসে মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ হয়েছে। একটি মাত্র প্রকল্পে ৫০ শতাংশ কাজ হয়েছে। একটা জেলার ক্ষেত্রে তা একবারেই ঠিক নয়। এই কাজ ৭৫ শতাংশ হওয়ার কথা ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। হিসাব মতো ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৫ শতাংশ কাজ হয়ে গেলে, বাকি তিন মাসে বাকি ২৫ শতাংশ কাজ করাটা অনেক সহজ।


মন্ত্রীর কথায়, আগামী ১ মাসের মধ্যে আরো ৩৫ শতাংশ কাজ করতে হবে। যা শুধু অসম্ভবই নয়, অনেক ক্ষেত্রে কাজ দ্রুত করতে গিয়ে দূর্নীতির অভিযোগ উঠে। মন্ত্রী আরো বলেন, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেছেন নতুন জেলা। একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে তারা আমায় বলেছেন, কাজ তারা ঠিক সময়ের মধ্যে করে দেবেন।
এদিন আসানসোলের জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় সংলগ্ন জেলা সার্কিট হাউসের মিটিং হলে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত রাজ দপ্তরের রাষ্ট্র মন্ত্রী কপিল মহেশ্বর পাতিলের উপস্থিতিতে পর্যালোচনা বৈঠক বা রিভিউ মিটিং শুরু হয়।

এই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রশান্ত শুক্ল, সচিব তাপস মন্ডল, আসানসোলের (সদর) মহকুমাশাসক অভিজ্ঞান পাঁজা, ডিপিআরডিও তমোজিৎ চক্রবর্তী সহ পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। দেখা যায় মন্ত্রীর পাশেই রয়েছেন দূর্গাপুরের ( পশ্চিম) বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দে ও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির আহ্বায়ক সুব্রত মিশ্র। বৈঠকে জেলা প্রশাসনকের তরফে সব তথ্য প্রজেক্টের সাহায্যে দেখানো হয়। প্রায় এক ঘন্টা পরে এই বৈঠক হয়।


রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে মন্ত্রীরা বলে আসছেন কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাকে টাকা দিচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে কপিল মহেশ্বর পাতিল বলেন, এই অভিযোগ ঠিক নয়। কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্প ঠিক করে টাকা বরাদ্দ করে। তারজন্য গাইড লাইন থাকে। সব রাজ্যকে সেই গাইড লাইন মেনে কাজ করতে হবে। তবে কেন্দ্র সরকার টাকা দেবে। ১০০ দিনের কাজের যে কথা বলা হচ্ছে, তার অভিযোগ তো তৃনমুল কংগ্রেসের সাংসদ শতাব্দী রায়ই করেছিলেন। কেন্দ্র সরকার তা দেখতে গিয়ে গাইড লাইন না মেনে কাজ না করার তথ্য সামনে পায়। তাই টাকা আটকে দেয়। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও আবাস যোজনায় অভিযোগ ছিলো, বাংলায় নাম বদল করা হয়েছে।


দলের বিধায়ক ও নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাফাই এর মধ্যে কোন রাজনীতি নেই। আমি আসায় তারা এসেছেন। তারা কোন কথা বলেননি। তবুও আমি তাদের হল থেকে বেরিয়ে পাশের ঘরে বসতে বলেছিলাম।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্র মন্ত্রী কপিল মহেশ্বর পাতিল রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমন করেন। তিনি ভোট দেওয়া তো একজন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। তা হচ্ছে কিনা, তা দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের।
কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত রাজ দপ্তরের রাষ্ট্র মন্ত্রী কপিল মহেশ্বর পাতিলের কাজ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা নিয়ে জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক কোন মন্তব্য করতে চাননি।

Leave a Reply