BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

আসানসোলের লক্ষাধিক মানুষ জল পেলেন না

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল। বুধবার বিকেল থেকেই আচমকা বন্ধ হয়ে গেল কল্যাণেশ্বরী জলপ্রকল্প থেকে ১০ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহের কাজ। আর সেই কারণে বৃহস্পতিবারও সকাল থেকেই জল পেলেন না সালানপুর, বারাবনি, কুলটি ,আসানসোলের লক্ষাধিক মানুষ। আগে থেকে যেহেতু কোনও ঘোষণা ছাড়াই জল সরবরাহ বন্ধ রেখে নতুন পাইপ লাইনের কাজ করায় সংকটে ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।


বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হইচই পড়ে যায় যখন দেখা যায় বিস্তীর্ণ গ্রামীণ এলাকা জুড়ে অথবা শহরের কোথাও কোথাও জলের লাইন থেকে জল পরছে না। বাসিন্দারা খোঁজ নিতে গেলেও কেউই বলতে পারছিলেন না সমস্যা কোথায় বা কখন ঠিক হবে? বিষয়টি এই সময় এর কানে আসতেই খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় কল্যানেশ্বরী জলপ্রকল্পের নতুন করে যে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের কাজের পাইপ লাইন বসেছে তার একটি অংশে পুরনো পাম্পকে জোড়া হবে ।সেই কাজের জন্যই বিদ্যুতের সংযোগ করে পাইপ লাইনে ওয়েল্ডিং হচ্ছে। এর ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা বুধবার বিকেল থেকেই জলহীন হয়ে পড়েছে। আসানসোলের দক্ষিণ থানা এলাকার ফতেপুর , বরাচক সহ জিটি রোডের দুপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা ,কুলটির বিস্তীর্ণ এলাকা, সালানপুর ব্লকের রূপনারায়নপুর, দেনদুয়া, দেশবন্ধু পার্ক সহ- সমগ্র ব্লক, বারাবনির বেশকিছু গ্রামীণ এলাকা বুধবার বিকেল থেকেই জল পড়ছে না জলের পাইপ লাইনে ।


আসানসোলের ফতেপুরের বাসিন্দা মনোজ মাজি বলেন পাইপে জল না আসায় আমাদের পুর এলাকার মানুষদের চোখের জল পড়ছে ।কেননা এসব এলাকা আসানসোল পুরসভার মধ্যে পড়লেও এখানে জনসাস্থ্য কারিগরি দপ্তর কল্যানেশ্বরী প্রকল্পের মাধ্যমে জল দেয়। ফলে হাজার হাজার মানুষ সহ বুধবার বিকেলের পর থেকে আমরা জল পাচ্ছি না। কেউ বলতেও পারছেন না কোথায় কি হয়েছে এবং কখন জল আসবে। এ সম্পর্কে কোন মাইকে ঘোষণা করা হয়নি বা কোথাও কোন নোটিশ ও দেওয়া হয়নি । তাহলে আগে থেকে কিছু জল সংগ্রহ করে রাখা যেত। রূপনারায়নপুরের অতনু রায় বর্মন বলেন গরমে এমনিতেই আমাদের জল সংকট ব্যাপক হয় । কুও শুকিয়ে যায় ।এবার শীতেও গতকাল বিকেল থেকে জল আসেনি। কুড়ি লিটার জল ৩০ টাকা করে কিনে আনলাম।


এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের এক্সকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রুপম ঘোষ জানান আমাদের কল্যানেশ্বরীতে সালানপুর এবং বারাবনি এলাকার জন্য ১১৮ কোটি টাকার নতুন জল প্রকল্পের লাইনের কাজ চলছে। আগামী নয় মাসের মধ্যে আশা করা যায় আমরা বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিতে পারব। বরাকর নদী থেকে প্রধান যে লাইনটি তৈরি হয়েছে কল্যাণেশ্বরীতে সেখানে পুরনো পাম্পের সাথে প্রধান লাইনটি বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ করার জন্য জল বন্ধ রাখা হয়েছে। আশা করছি শুক্রবার দিন আবার জল সরবরাহ সম্ভব হবে। এত বড় কাজের জন্য যখন জলের সরবরাহ বন্ধ তখন আগাম নাগরিকদের জন্য ঘোষণা করেই জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল বলে নাগরিকরা দাবি করছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন নিশ্চয়ই আগামী দিনে তা মাথায় রাখা হবে। তবে আমরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জানিয়েছিলাম ।

কল্যানেশ্বরী জল প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা অন্যতম এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ( মেকানিকাল) রবি সরকার বলেন এই প্রকল্পে আমাদের প্রতিদিন দশ মিলিয়ন গ্যালন জল তুলে পরিশ্রুত করে সরবরাহ করা হয় ।কিন্তু সেখানে পাইপ লাইনের কাজ চলায় সেটা বন্ধ রাখা হয়েছে সমগ্র এলাকায়।

Leave a Reply