ASANSOL

আসানসোলে যানজট আটকাতে কড়া পদক্ষেপ পুলিশ ও প্রশাসনের, জিটি রোডের একাংশে টোটো চলাচল বন্ধ

তৃণমুলের পতাকা নিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ চালকদের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ( Asansol Live News Today ) হাজার হাজার বেআইনি টোটো চলাচলে কার্যত শিকেয় উঠেছে আসানসোল শহরের যান চলাচল ব্যবস্থা। যত্রতত্র যানজটে শহরের জিটি রোড সহ একাধিক ব্যস্ততম রাস্তায় নাজেহাল অবস্থা। নাভিশ্বাস উঠেছে পথ চলতি মানুষের। মিনিবাস চলাচল বন্ধ হয়েছে অনেক রুটে।
শেষ পর্যন্ত টনক নড়ে পুলিশ ও প্রশাসনের। শুক্রবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আসানসোল শহরের জিটি রোডের একাংশে টোটো চলাচল। বলা হয়েছে, জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় থেকে গীর্জা মোড় পর্যন্ত টোটো চলাচল করবে না। আর এতেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে টোটো চালকদের মধ্যে।


এদিন সকাল টোটো চালকেরা আসানসোল শহরের জিটি রোড ও হটন রোডে শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের প্রতীক সহ শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পতাকা নিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। অন্যসব রুটে টোটো চলাচল বন্ধ করে দিয়ে প্রচুর চালক পুলিশ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও তাদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করতে হবে, এই দাবি নিয়ে শ্লোগান দিয়ে হটন রোডে মিছিল করা হয় । হটন রোড ও জিটি রোডের সংযোগস্থলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। বিক্ষোভ দেখানো হয় জিটি রোডের বস্তিন বাজার মোড় সংলগ্ন আসানসোল দক্ষিণ থানার ট্রাফিক গার্ড অফিসের সামনেও। টোটো চালকের এদিন সকাল থেকে এইভাবে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধের ফলে অন্য গাড়ি চলাচলে সমস্যা তৈরী হয়। দূর্যোগে পড়েন স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষেরা। আসানসোল দক্ষিণ থানা ও ট্রাফিক গার্ড পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে


খবর পেয়ে আসেন আইএনটিটিইউসি নেতা রাজু আলুওয়ালিয়া। তিনি বিক্ষোভ দেখানো টোটো চালকের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলা হয় পুলিশের সঙ্গে।
পরে আইএনটিটিইউসি নেতা রাজু আলুওয়ালিয়া বলেন, আমি টোটো চালকের বলেছি তাদের সমস্যা নিয়ে রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আইএনটিটিইউসির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটকের সঙ্গে কথা বলবো। কোন একটা সমাধান সূত্র বার করা হবে। তিনি আরো বলেন, যারা টোটো চালায় তারা সবাই বেকার। পরিবারের জন্য তারা এই টোটো চালাচ্ছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন জিটি রোডের একটা অংশে টোটো চলাচল করতে দিচ্ছে না। কিন্তু আমি তো বারবার বলেছি, টোটো শোরুমগুলির বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। কারণ তারা বেআইনি টোটো বিক্রি করে অপরাধ ও প্রতারণা করছে। আমার দাবি, শুধু রেজিষ্ট্রেশন করলে হবে না। টোটোর নির্দিষ্ট রুট করতে হবে।


টোটো চালকেরা বলেন, জিটি রোডের এমন একটা অংশে গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তাতে গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যা হবে। তারা বলেন, আমাদের জিটি রোড পারাপার করতে দেওয়া হোক। পুলিশ প্রশাসন যদি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে, তাহলে আন্দোলন করা হবে।
এদিন বিকেলে টোটো চালকেরা আসানসোল পুরনিগমের সামনেও বিক্ষোভ দেখান।
অন্যদিকে অভিজিৎ ঘটক বলেন, এই সিদ্ধান্ত পুলিশ প্রশাসনের। এতে আমাদের কিছু করার নেই। তবু্ও আমরা দেখছি, কি বিকল্প রাস্তা বার করা যায়। আলোচনা করা হবে।


এদিকে, পুলিশ জানায়, সবার সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত সাতদিন ধরে এই নিয়ে শহর জুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, শহরে যানজট ব্যাপক আকার নিয়েছে। কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে টোটোর সংখ্যা গত কয়েক আগে কয়েক গুন বেড়েছে। ১৫ হাজারের বেশি টোটো চলাচল করছে। শুধু টোটো নয়, যানজট আটকাতে বেআইনি সবকিছুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Leave a Reply