ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

তপসি রেলওয়ে সাইডিং তোলাবাজির অভিযোগ

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, রানীগঞ্জ : এক র‍্যাক লৌহ আকরিক এর কাঁচামাল যদি আপনি পেতে চান তাহলে আপনার লাগবে অতিরিক্ত চার লক্ষ টাকা, তবেই আপনি পাবেন আপনার লৌহ আকরিক তৈরির কাঁচামাল। শুক্রবার এমনই এক বিষয় নিয়ে, দিনভর বন্ধ রইল পণ্য পরিবহনের কাজ। ঘটনাটি জামুরিয়া শিল্প তালুকের তফসি রেলওয়ে সাইডিং এর ঘটনা।

একদিকে যখন রাজ্যে শিল্পের জোয়ার আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নানান কর্মকাণ্ড করে চলেছেন। সেই সময়ে শুধুমাত্র বাড়তি লক্ষ্মী লাভের আশায়, ভিন রাজ্য থেকে আসা লৌহ আকরিকের কাঁচামাল সরবরাহ করার জন্য আর একশ টাকা অতিরিক্ত চাওয়ায়, বন্ধ হয়ে গেছে তফসি রেলওয়ে সাইডিং এর পণ্য ওঠা নামার কাজ।

লৌহ ইস্পাত শিল্পের জামুরিয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেল্টের আয়রন এন্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পবন মাউন্ডিয়া দাবি করেছেন, প্রত্যেকটি রেলের র‍্যাক লাগলে এবার থেকে তাদের অতিরিক্ত ৪ লক্ষ টাকা করে দিতে বলা হয়েছে, যা দেওয়া একেবারে অসম্ভব বলেই দাবি করে, তারা জানান, দরকার হলে তাদের কাজ বন্ধ করে দেবেন, প্রয়োজনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সঙ্গে কথা বলবেন, কিন্তু কোন ভাবেই এই অন্যায় আবদার তারা মানবেন না। উল্লেখ্য খনি অঞ্চল শিল্পাঞ্চলে লৌহ ইস্পাত শিল্পে দীর্ঘ একটা মন্দা সময় কাটিয়ে ওঠার পর আবার নতুন করে কাঁচামালের যোগান, সঠিকভাবে পাওয়ার কারণে, কলকারখানা গুলি আবার পুরনো উদ্যমে তাদের উৎপাদনের কাজ শুরু করেছে। তারপর হঠাৎ করেই এরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় বিপাকে পড়েছে তারা।

শুক্রবার তপসি রেল সাইডিং এ গিয়ে দেখা যায় অসংখ্য পণ্য পরিবহনের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র, আর সেই সকল গাড়িতে পণ্য সামগ্রী বজায়ের জেসিবি ও দাঁড়িয়ে রয়েছে রেলওয়ে ইয়ার্ডের মধ্যেই, কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত ও কারণেই সেই সকল পরিবহনের গাড়িতে লৌহ আকরিকের কাঁচামাল তোলার জন্য কোন উদ্যোগী নেওয়া হচ্ছে না। অথচ গভীর রাত্রি দুটো নাগাদ এই কাঁচামালের একটি র‍্যাক এসে পৌঁছই যা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খালি করার নিয়ম রয়েছে, আর তারপর থেকেই লাগছে চক্রবৃদ্ধির হারে ফাইন। যতক্ষণ না পর্যন্ত রেলের ইয়ার্ড খালি করে দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত ওই সকল পণ্য নিয়ে আসা মালিকদের ওই পণ্য দীর্ঘক্ষণ ধরে সেখানে রাখার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। একইভাবেই অপর একটি ওয়াগেনে করে কাঁচামাল নিয়ে হাজির হওয়ার পরও তা নামানোর কোন উদ্যোগী গ্রহণ করা হয়নি।

আর এই সকলি হচ্ছে সম্পূর্ণটাই অতিরিক্ত টাকা আদায় করার জন্য বলেই দাবি। কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, কারা, কি উদ্দেশ্যে, কি কারনে, এই অতিরিক্ত টাকা ডিমান্ড করছে, সে বিষয়টা এখন স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। তাই সে টাকা দেওয়ার কোন মানে হয় না, তাই অতিরিক্ত টাকা দিতে তারা রাজি নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন পবন মাউন্ডিয়া। এ প্রসঙ্গে অবশ্য শাসক দলের কাছ থেকে কোন সদুত্তর উঠে আসেনি।
বিরোধীদল সিপিএমের শ্রমিক নেতা মনোজ দত্ত দাবি করেছেন। এই সকল টাকা উপার্জনের মাধ্যমেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসক দল, যা জলের মত স্পষ্ট বলেই দাবি তার।

Leave a Reply