BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

কল্যানেশ্বরী লেফটব্যাংক ডিভিসি হায়ার সেকেন্ডারী স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি বন্ধ করে দেওয়াতে ছাত্রছাত্রীরা চরম সমস্যায় পড়েছেন

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। বারাবনি বিধানসভার সালানপুর ব্লকের কল্যানেশ্বরী লেফটব্যাংক ডিভিসি হায়ার সেকেন্ডারী স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে ২০১৯ অর্থাৎ চার বছর আগে থেকেই বাংলা মাধ্যমের উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ দ্বাদশ শ্রেণী তুলে দেওয়া হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি বন্ধ করে দেওয়াতে ঐ এলাকার বাংলাভাষী ছাত্রছাত্রীরা চরম সমস্যায় পড়েছেন । উচ্চমাধ্যমিক পড়ার যে সুযোগ এই স্কুলে তারা পেতেন তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। একই সঙ্গে এই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক না থাকার কারণে তো কম্পিউটার রুম বন্ধ ।অর্ধেকের বেশি শিক্ষক শিক্ষিকা না থাকাতে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও চরম অসুবিধা দেখা দিয়েছে। ছাত্রীরা কন্যাশ্রী সহ অন্যান্য সুবিধাও পাচ্ছেন না করনিকের অভাবে।



এই বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জনতোষ হালদার বলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বীকৃত ও মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সিলেবাস অনুযায়ী এই বিদ্যালয়ে ৫০০ মত ছাত্র-ছাত্রী আছে। অধ্যক্ষ সহ শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র ১১ । অধিকাংশ বিষয়ভিত্তিক নির্দিষ্ট শিক্ষক শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরে নেই। নেই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মী ও করণিক। নেই ল্যাব টেকনিশিয়ানও । ৭০ দশকের শুরুতেই ডিভিসি কর্তৃপক্ষ এখানকার জমিহারা এবং কল্যানেশ্বরি সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনের কথা বলে এই বিদ্যালয়টি তৈরি করেছিলেন। তবে এখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের স্বীকৃতি থাকায় তাদের সমস্ত নিয়ম মেনেই হিন্দি এবং বাংলা মাধ্যমিক পড়ানো হয়। বাংলা মিডিয়ামে এখানে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণী পড়ানো হতো ২০১৯ পর্যন্ত। চার বছর আগে শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে তাও বন্ধ হয়ে গেছে।

বিষয়টি রাজ্যের বা জেলার শিক্ষা অধিকারী এবং ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ঠিক দেড়মাস আগেই আমাদের বিদ্যালয় স্থানীয় তৃণমূলের বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় এসেছিলেন। কিন্তু প্রশাসন বা কোন দিক থেকেই এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি কোন বিষয়ে। আমি নিজেও ডিভিসির কলকাতা দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক ও রাজ্ শিক্ষা দপ্তরেআধিকারিকদের কাছে লিখিতভাবেই শিক্ষক এবং কর্মী চেয়েছি। নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও ভাষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষক প্রয়জন। ল্যাব টেকনিশিয়ান না থাকায় অত্যন্ত উন্নত মানের ল্যাবটারিটাই বন্ধ হয়ে আছে। ২৫ টি কম্পিউটার আছে যেগুলো আমরা কর্মীর অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে চালাতে পারছি না।

এই বিদ্যালয়তে কল্যানেশ্বরী, দেবীপুর, জামিরকুঁড়ি, বাথানবাড়ি ,বনজেমারী, দেনদুয়া, রামনগর, লেফট ব্যাঙ্ক সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করতে আসে। এদের মধ্যে একটি বড় অংশই অত্যন্ত দুস্থ পরিবার থেকে আসে। ফলে রাজ্য সরকারের সুযোগ সুবিধা থাকলেও তারা কোনটাই পায় না বলে জানান অভিভাবক গুলজার খান এবং কৌশিক ভরদ্বাজ। তারা দুজনেই বলেন এ বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং ডিভিসি দুই জায়গার আধিকারিকদের সক্রিয় হতে হবে।
বিধান উপাধ্যায় বলেন আমাকে ঐ স্কুল থেকেই শিক্ষক এবং অভিভাবকরা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা না থাকার অভিযোগ করেছেন। আমি স্কুলের সবার কথা শুনে বলেছি বিষয়টা নিয়ে রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তরের সাথে কথা বলে কিছু করার চেষ্টা করব । কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী সুযোগ যাতে সবাই পায় তা নিয়েও আমি জেলা শিক্ষা দপ্তরে আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করব। জেলা শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত জেলাশাসক সঞ্জয় পাল বলে বিষয়টা নিয়ে নিশ্চয়ই খোঁজ নেব।

Leave a Reply