ASANSOL

কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন কমিটি থেকে ২৪ জন অধ্যাপকের পদত্যাগ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ( Asansol News Today ) আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ ও রেজিস্টারকে কাজে ফেরানোর দাবিতে অধ্যাপক ও কর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার ছুটির দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে দেখা গেল অধ্যাপক ও কর্মচারীদের কয়েকজন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের অবস্থান-বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে। এই আন্দোলন শনিবার ৫ দিনে পড়লো।
একই সঙ্গে দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটি থেকে ২৪ জন অধ্যাপিকা ও অধ্যাপক পদত্যাগ করেছেন। তাদের মধ্যে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের অনুমোদিত অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার আহ্বায়ক অধ্যাপক সজল কুমার ভট্টাচার্য ক্যান্টিন কমিটি , প্রদীপ কুমার দাস স্পোর্টস অফিসার পদ , শান্তনু বন্দোপাধ্যায় মিউজিয়াম, শেখ নাজমুল আই কিউ এসির ডিরেক্টর পদ ,উজ্জ্বল কুমার রায় ও তপন দাস এনএসএস , শ্রীরাম মজুমদার ও সুমিত পারুই স্পোর্টস বিভাগের আধিকারিকের পদ ও অরিজিৎ সিনহা আর এন ডির ডিরেক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।


জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল থেকে এই পদত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। শনিবারেও তা চলে বলে জানা গেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টারের কাছে নিজেদের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন মেলের মাধ্যমে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আগে ভিসি ( ভাইস চ্যান্সেলার বা উপাচার্য) গো ব্যাক বা ভিসির নামে একাধিক দেওয়াল লেখা হয়েছিলো। এখন প্রশাসনিক ভবনের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দেওয়াল গুলি আছে সেখানেও এই ধরনের লেখা হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা অধ্যাপক সজল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, আমি সহ একাধিক সংখ্যায় অধ্যাপক ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান কমিটি থেকে পদত্যাগ করে, পদত্যাগ পত্র তারা মেল করে ডেপুটি রেজিস্টারকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
দাবি আদায়ে আদালতে এখনই যাবেন কিনা বা বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যের পাল্টা পুলিশের কাছে অভিযোগ করবেন কিনা, এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো এ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকলেও বেশ কয়েকজন তাদের আন্দোলন করছেন।
তিনি আরো বলেন, এদিন পরীক্ষা না থাকলেও পরীক্ষা কোথাও কোন অসুবিধা হচ্ছে না। সম্ভবত ২৩ মার্চ পর্যন্ত পরীক্ষা আছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কোন অসুবিধায় যাতে না হয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমরা প্রতিমুহূর্তে সেটা নজর রাখছি।


ইতিমধ্যেই উপাচার্যের চেম্বার বা তার সচিবালয়ের তালা মেরে সেই চাবি রেজিস্টারের অফিসে থাকায় অফিস খোলা যাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রেজিস্টারের অফিসে চাবি রাখা আছে। কর্মচারীরা এসে সেই চাবি নিয়ে খুলতেই পারেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরিস্থিতিতে উপাচার্য ঢুকতে পারছেন না। রেজিস্টারকে উপাচার্য তার পদ থেকে ডিসচার্জ বা সরিয়ে দেওয়ায়,তা শূন্য হয়ে আছে। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীরা এস্টেট অফিসারের কাছ থেকে জোর করে হস্টেল সহ একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব থেকে তার পদত্যাগ পত্র লিখিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। সেইসব কারণে যে শূন্যতা তৈরী হয়েছে তাতে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকটাই অনিশ্চয়তা নেমে আসছে।


বিভিন্ন কমিটি থেকে অধ্যাপক ও অধ্যাপিকাদের পদত্যাগের প্রসঙ্গে উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তী বলেন, এই ধরনের পদত্যাগের কোন গুরুত্ব নেই। কেন না সবার নিয়োগকর্তা পদাধিকারবলে হলেন উপাচার্য। ফলে তার কাছে যদি সেই পদত্যাগ পত্র আসে তাহলে তিনি নিশ্চয়ই তা নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন দেওয়ালে নতুন করে তার বিরুদ্ধে যে দেওয়াল লেখা হচ্ছে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে এটা অত্যন্ত রুচিহীন কাজ করেছেন যারা তা করেছেন। এদের কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে? এর পাশাপাশি তিনি বলেন, অধ্যাপক ও অধ্যাপিকারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো কাজ গুলো কিন্তু সাংবাদিকদের কাছে বলছেন না । যেমন এই মুহূর্তেই আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় কিকবক্সিং প্রতিযোগিতায় রুপোর মেডেল পেয়েছে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। মাইনিং বিভাগের বেশ কয়েকজন ছাত্র গেট পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। মেট্রলজিক্যাল বিভাগের বেশ কয়েকজনের ভালো ধরনের প্লেসমেন্ট হয়েছে। এইসব কিছু কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই হয়েছে। ফলে তারা যা বলছেন, উপাচার্য্য কিছু করেননি, তা প্রমাণিত হয়না।

Leave a Reply