DURGAPUR

দূর্গাপুরে চাঞ্চল্য একই পরিবারের চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার, মা ও মামাতো ভাই আটক

বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম বর্ধমান জেলার ইস্পাত নগরী দুর্গাপুরের কুরুড়িয়া ডাঙা এলাকায়। রবিবার সকাল ৬ টা নাগাদ এই ঘটনার কথা জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দুর্গাপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে। মৃতের আত্মীয়রা পুলিশকে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করতে বাধা দেয়। তাদের দাবি, দুই সন্তান সহ স্বামী ও স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। খুনিদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা যাবেনা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ মৃত যুবকের মা বুলারানি মন্ডল ও মামাতো ভাই গৌতম নায়ককে আটক ও অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মৃতরা হলো অমিত মন্ডল ( ৩৭), রুপা মন্ডল, নিমিত মন্ডল (৭) ও নিকিতা মন্ডল (২)। মৃতা রুপা মন্ডলের বাবা বাঁকুড়ার তালডাংরার বাসিন্দা বিশ্বম্ভর পাল এই ঘটনা নিয়ে দূর্গাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগ ২০ জনের নাম আছে।
জানা গেছে, পেশায় জমির কেনাবেচার কারবারি অমিত মন্ডল ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির দোতলার ঘর থেকে। সেই ঘরের মধ্যেই তার স্ত্রী রুপা ও ছেলে ও মেয়ের দেহ মেঝেতে পড়ে ছিলো।


রবিবারের সাত সকালে শোরগোল ফেলে দেওয়া এই ঘটনা খুন নাকি আত্মহত্যা ? জমি নিয়ে কোন্দল নাকি পারিবারিক সম্পত্তি বিবাদ ? এই খুনের পেছনে কি যুবকের মায়ের সঙ্গে যুবকের মামার বাড়ির হাত রয়েছে ? চারজনের এই মৃত্যুর পিছনে কি অন্য কারোর হাত রয়েছে ? মৃত যুবকের পারিবারিক ওয়াটস এ্যাপ ও ফেসবুকে মেসেজ কি আরো বড় কোন রহস্যের দিকনির্দেশ করছে ? রহস্য দানা বাঁধছে মৃত যুবকের শ্যালিকার দাবীতে । একের পর এক রহস্যের জাল ক্রমশ জটিল করে তুলছে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর এই ঘটনাকে। এর পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা ও মৃত দম্পতির আত্মীয় পরিজনেরা । প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরেই জানা যাবে এই চারজনের মৃত্যুর আসল কারন।
কুরুরিয়া ডাঙার মিলনপল্লীর বাসিন্দা অমিত মন্ডলের স্ত্রী , ছেলে ও মেয়ের দেহ মাটিতে পড়েছিল আর অমিত মন্ডলের মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় । অমিতের হাত পেছন থেকে বাঁধা ছিল।


স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, অমিত মন্ডলের মা বুলারানী মন্ডল ও অমিত মন্ডলের মামার বাড়ির লোকেদের গ্রেফতার করে কড়া শাস্তি দেওয়া হোক । নিজেকে মাসতুতো বোন বলে দাবি করা সুদীপ্তা ঘোষ বলেন, অমিত মন্ডল ও তার পরিবারের সবাইকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে রয়েছে অমিতের মোবাইল ফোন থেকে রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ পারিবারিক ওয়াটস এ্যাপ গ্রুপে করা ম্যাসেজ ।


আরো জানা গেছে, অমিতের বাড়ির সিসিটিভি কালো পলিথিনে ঢাকা দেওয়া হয়েছিল বলে দাবী পরিবারের সদস্যদের । অভিযোগ, অমিতের মা বুলারানী মণ্ডল এই বাড়িতেই নিচের তলার রুমে ছিলেন। আরো অভিযোগ তিনি তার ছেলে, বৌমা নাতি ও নাতনিকে দেখতে পারতেন না। যা সবাই জানতো।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( পূর্ব) কুমার গৌতম বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যুবকের মা ও এক মামাতো ভাইকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সবদিক থেকেই তদন্ত করছে। ঠিক কি কারণে এই ঘটনা, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে অমিত মন্ডলের সঙ্গে রুপা মন্ডলের বিয়ে হয়েছিলো।

Leave a Reply