ASANSOL

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দলের প্রার্থীরা ২০১৮ এর তুলনায়  অনেক কম আসনে জয়ী হয়েছেন

বিরোধীদল গুলির মনোনয়ন সংখ্যায় বেড়েছে

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল ।পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গতবারের তুলনায় বিরোধীদল গুলির মনোনয়ন সংখ্যায় যেমন বেড়েছে, তেমনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দলের প্রার্থীরা ২০১৮ এর তুলনায় অনেক কম আসনে জয়ী হয়েছেন। জেলানির্বাচন দপ্তরের আধিকারিক তমজিত চক্রবর্তী জানান ২০১৮ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলা ৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮৩৩ টি আসনের মধ্যে শাসক দলের ৫৩২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে ছিলেন। এবার গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা বেড়ে ১০২০ হয়েছে। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৭১ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির ২০১৮ সালের ১৬১ টি আসনের মধ্যে ৯৫ টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল। এবার পঞ্চায়েত সমিতি আসন সংখ্যা বেড়ে ১৭২ হয়েছে। আর এবার মাত্র ১৮ জন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে থাকলো। জেলা পরিষদে অবশ্য ১৮ টি আসনে একজনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন নি ।এই জেলায় সব কটি আসনে বিজেপি এবং বামফ্রন্টের প্রার্থীরা প্রার্থী দিয়েছেন।


প্রাপ্ত সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন তার মধ্যে প্রথমেই আছে বারাবনি ।যেখানে ১১৮ টি আসনের মধ্যে ৫৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে আছেন। এরপরেই আছে পাণ্ডবেশ্বর ১৩৪ জনের মধ্যে ৬৩ জন। দুর্গাপুর ফরিদপুরে ১১০ জনের মধ্যে ৪২ জন ।জামুরিয়াতে ১১২ জনের মধ্যে ২৯ জন। রানীগঞ্জে সবচেয়ে কম ৯৩ জন এর মধ্যে ১৫ জন এবং সালানপুরে ১১৯ জনের মধ্যে ৩১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন ।


অপরদিকে পঞ্চায়ে ত সমিতিতে বারাবনিতে সবচেয়ে বেশি ২৩ টি আসনের মধ্যে ৯টি আসনেই শাসক দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন ।দ্বিতীয় স্থানে আছে জামুরিয়া ২৫ টি আসনের মধ্যে ৪টি আসন দুর্গাপুর ফরিদপুরে ১৮ টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে এবং সালানপুর ও রানীগঞ্জে ১টি করে আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা।
২০১১৮ রতুলনায় ২০২৩এ পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসক দলের প্রার্থীদের জয়ের সংখ্যা প্রায় ৩৮ শতাংশ কমেছে, আর পঞ্চায়েত সমিতিতে তা পঞ্চাশ শতাংশের বেশি কমেছে। তাহলে বিরোধীরা এত চিৎকার করছেন কেন এই প্রশ্ন তুলেছেন দলের জেলা সভাপতি নরেন চক্রবর্তী থেকে বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় পর্যন্ত নেতারা। দুজনেই বলেন বিরোধীদের সাথে মানুষ নেই। এটা এই জেলাতেই ওরা সব আসনে প্রার্থী না দেওয়া তা প্রমাণিত। ওরা প্রতিদিন নতুন নতুন নাটক করছেন।


অন্যদিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন প্রথমে মনোনয়নে বাধা, তারপর প্রার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে আক্রমণ ফোনে হুমকি এবং কোথাও কোথাও প্রার্থীদের ঘরছাড়া করা ।তবু মানুষ পাল্টা প্রতিরোধ করায় এবার বেশিরভাগ আসনেই প্রার্থী দেওয়া গেছে।
বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় এবং দলের জেলা সভাপতি দিলীপ দে দুজনেই বলেন আমাদের জেলা পরিষদের প্রার্থীর মাথা ফাটানো হয়েছে। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে আছেন। বারাবনিতে এক প্রার্থী প্রত্যাহার না করায় তার পানীয় জল পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপর যদি ওরা বলেন ভালো পরিবেশে ভোট হচ্ছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সংখ্যা কমেছে তাহলে কেউই বিশ্বাস করবেন না ওদের কথা।

Leave a Reply