ASANSOL

আসানসোল আদালতের আইনজীবী খুন, জেল হেফাজত স্ত্রী ও শ্বশুরের, ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তুতি পুলিশের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( Asansol Latest News Today ) আসানসোল জেলা আদালতের আইনজীবী ব্রজেশ্বর দাস খুনের ঘটনায় ১৪ দিন পুলিশ রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার ধৃত আইনজীবীর স্ত্রী শম্পা দাস ও শ্বশুর তারকনাথ দাসকে আসানসোল আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেলা হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিনও কোন আইনজীবী ধৃতদের হয়ে আইনজীবী এজলাসে দাঁড়াননি। এরআগে গত ২৩ জুন ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডে শেষে জেল হেফাজত হয়েছে আরো এক ধৃত ল” ক্লার্ক মনোজ কুমার যাদবের।

file photo


অন্যদিকে, আইনজীবীর দেহাবশেষ হিসাবে পুলিশ যে হাড়গোড় উদ্ধার করেছে তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এরজন্য ইতিমধ্যেই আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আদালতে আবেদন করে তার অনুমতি চেয়েছে। এই পরীক্ষার জন্য পুলিশ প্রস্তুতি নিয়েছে। আদালত থেকে অনুমতি মিললেই তা করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গতঃ, বুধবার বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেশ তেওয়ারি, সম্পাদক বাণী কুমার মণ্ডল, সিনিয়র আইনজীবী অমিতাভ মুখোপাধ্যায় , জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী বা পিপি ইনচার্জ স্বরাজ ওরফে বাচ্চু চট্টোপাধ্যায় সহ অন্য আইনজীবীরা এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সোচ্চার হন। তাদের আরো দাবি, ধৃতদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। কারণ আইনজীবীরা বিশ্বাস করতে পারছেন না যে মাত্র এই তিনজন জড়িত আছে এই ঘটনায়।


প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল শহরের জিটি রোডের গোধূলি রোডের একটি বহুহলের বাসিন্দা ঐ আইনজীবী খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১৪ জুন প্রথম গ্রেফতার করা হয়েছিলো মৃতের স্ত্রী শম্পা দাস ও শ্বশুর তারক নাথ দাসকে। পরের দিন দুজনকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেয় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। পরের দিন গ্রেফতার করা হয় জেলা আদালতের ল”ক্লার্ক মনোজ কুমার যাদবকে। তাকে ১৬ জুন আসানসোল জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন।.


উল্লেখ্য, গত ১০ জুন সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান আইনজীবী ব্রজেশ্বর দাস। তার কোন খোঁজ না পেয়ে বিষয়টি জানিয়ে স্ত্রী আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঐ বহুতলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করার পাশাপাশি পুলিশ পরিবারের সদস্য সহ একাধিক জনকে জেরা করে। এরপর আইনজীবীর এক ভাইপো পুলিশের কাছে অপহরণের আশঙ্কা করে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশ নড়েচড়ে বসে। বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর পেয়ে আইনজীবীর শ্বশুর অন্ডালের কাজোড়ার বাসিন্দা তারক নাথ দাস ও স্ত্রী শম্পা দাসকে আবার জেরা করলে পুলিশের সামনে আসল তথ্য বেরিয়ে আসে। জানা যায়, ১০ জুন আসানসোলের আবাসনে আইনজীবীর সঙ্গে তার স্ত্রীর ঝগড়া হচ্ছিলো। সেই সময় স্ত্রী ও শ্বশুর মিলে তাকে তার মারধর করে। তাতে তার মৃত্যু হয়। তখন মৃতদেহ একটি চারচাকা গাড়ি করে আসানসোল থেকে কাজোড়ায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার শ্বশুরবাড়ির পেছনে বাগানে গর্ত করে পেট্রোল ঢেলে আইনজীবীর দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। তদন্তে সেই গর্ত থেকে পুলিশ হাড়গোড় সহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করেছে।

Leave a Reply