ASANSOL

আসানসোলে মর্মান্তিক ঘটনা, বন্ধ ঘরের জলন্ত উনুন রেখে ঘুম, মৃত ১, অসুস্থ ৫

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও কাজল মিত্র : ( Asansol News In Bengali ) বাড়িতে বন্ধ ঘরের মধ্যে জলন্ত উনুন রেখে ঘুমোনোয় মারণ গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হলো এক মহিলার। এই ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ একই পরিবারের আরো ৫ জন। অসুস্থদের মধ্যে এক শিশু রয়েছে। ৫ জনই আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল দক্ষিণ থানার আসানসোল পুরনিগমের ৮৫ নং ওয়ার্ডের মহিশীলা কলোনির অরবিন্দ পল্লী এলাকায়। শনিবার সকালে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মৃত মহিলার নাম পান্না ওরফে হাসি নাথ (৪৭)। অসুস্থদের নাম হলো ত্রিলোচন নাথ (৫০), রাহুল নাথ (২০), জ্যোৎস্না পাল (৬০), রিঙ্কু পাল ( ২৭) ও বুবাই পাল (১০)।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহিশীলা কলোনির অরবিন্দ পল্লী এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন জ্যোৎস্না পাল ও তার পরিবার। তার মেয়ে পান্না ওরফে হাসি নাথ ও নাতনি রিঙ্কু পাল মহিশীলা কলোনির শিমুলতলা এলাকায় ঠ্যালাগাড়ি করে রুটি তরকারি বিক্রির ব্যবসা করতেন। প্রাথমিক অনুমান , শুক্রবার রাতে রুটি বানানোর জন্য জলন্ত উনুনটি ঘরের মধ্যে রেখে ঘুমিয়েছিলেন পাল পরিবারের সকল সদস্যরা। সাধারণতঃ প্রতিদিন সাতসকালেই পাল পরিবারের সদস্য ঘুম থেকে উঠে পড়েন। কিন্তু শনিবার সকালে পাল পরিবারের সদস্যদের উঠতে দেরি হওয়াও প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তারা ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ পাননি। তারা দেখেন বন্ধ ঘরের কাঁচের জানলায় পরিবারের শিশুটি দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেশীরা খবর দেন স্থানীয় পুর কাউন্সিলার কল্যানী রায়কে। তিনি আসানসোল দক্ষিণ থানায় খবর দেন। কাউন্সিলার পৌঁছে যায় এলাকায়। পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখে পরিবারের সকলেরা অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে। ঘরের ভেতরে রয়েছে একটা উনুন। তাতে সামান্য হলেও আগুন রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ৬ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে হাসি ওরফে পান্না নাথকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি ৫ জনকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন পরিবারের বড় সদস্যরা সকলেই অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন। কাউন্সিলার কল্যানী রায় বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আমাকে ঐ এলাকার একজন ফোনে এদিন সকালে সবকিছু জানায়। তখন পুলিশকে ফোন করে এলাকায় ছুটে যাই। ঐ পরিবারের দুই মেয়ে বাইরে থাকেন। তাদেরকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসছে।
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেন, বন্ধ ঘরের মধ্যে জলন্ত উনুন ছিলো। তাই তার আগুন থেকে কার্বন মনো-অক্সাইড গ্যাস হয়। ঘুমের মধ্যে সেই গ্যাস পরিবারের সদস্যদের শরীরের মধ্যে চলে যায়। তাতেই তারা অচৈতন্য হয়ে যান। এটা স্বাভাবিক। চিকিৎসকেরা বলেন, এই ব্যাপারে সবার সতর্ক হওয়া উচিত।
পুলিশ জানায়, এদিন দুপুরের পরে মহিলার মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হবে।
এই ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

Leave a Reply