BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

পথ দূর্ঘটনায় মৃত্যু পিকআপ ভ্যান চালকের, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, বারাবনি ও আসানসোল, মনোজ শর্মা ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ( Barabani News ) একটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া পিকআপ ভ্যান চালকের চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে পরিবার পরিজনদের বিক্ষোভ আসানসোল জেলা হাসপাতালে। রবিবার সকালের এই ঘটনায় জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আরো অভিযোগ, মৃত চালকের পরিবারের সদস্যরা এমারজেন্সি বিভাগে কর্মরত সরকারি এক নিরাপত্তা রক্ষীর উপর চড়াও হয়ে তাকে মারধর করে। নরেশ তাঁতি নামে ঐ নিরাপত্তা রক্ষীর মুখে আঘাত লাগায় তার তিনটি সেলাই হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জেলা হাসপাতালে ছুটে আসে। পুলিশ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
আসানসোল দক্ষিণ থানার জিটি রোডের আরকে মিশন বাইলেন মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা মৃত পিকআপ ভ্যান চালকের মহঃ কালাম (৩৫)। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঐ ভ্যান চালকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসানসোলের বারাবনি থানার ইটাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আমডিহা সিআইএসএফ ক্যাম্পের কাছে রবিবার ভোর ৫ টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে। আসানসোলের ১৯ নং জাতীয় সড়কের জুবিলিমোড়ের দিক থেকে আসানসোল – গৌরান্ডি রোড়ে দিয়ে একটি পিকআপ ভ্যান গৌরান্ডির দিকে যাচ্ছিলো। সেই সময় একটা দ্রুত গতিতে আসা ঐ পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে গৌরান্ডি দিক থেকে আসানসোলের দিকে যাওয়া একটা বাঁশ বোঝাই মোটর চালিত ঠেলা গাড়ির ধাক্কা লাগে। এর ফলে ঠেলা গাড়িতে থাকা বাঁশ পিকআপ ভ্যানের সামনের কাঁচ ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে যায়। এতে পিকআপ ভ্যানের চালক মহঃ কালাম গুরুতর আহত হয় । খবর পেয়ে বারাবনি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভ্যান চালককে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষনা করেন । এই ঘটনায় ঘটনাস্থলে কিছুক্ষনের মতো যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তা পুলিশের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে দূর্ঘটনার পরে মোটর চালিত বাঁশ বোঝাই ঠেলা গাড়িটির চালক ও হেল্পার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গাড়ি দুটিকে বারাবনি থানার পুলিশ আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।


এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সকাল সাতটা নাগাদ মৃত ভ্যান চালকের পরিবারের সদস্যরা জেলা হাসপাতালে ছুটে আসেন। মৃত চালকের ছোট ভাই মহঃ মাসুম ও পরিবারের সদস‍্যদের অভিযোগ, মহঃ কালামকে মৃত ঘোষণার পরেও তার পালস চলছিল। চিকিৎসকদের বলা হলেও তারা কোনো ব‍্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অজ্ঞাত পরিচয় মৃত তাকে ফেলে রাখা হয়।পরবর্তী ক্ষেত্রে মৃত যুবকের দেহ ময়না তদন্তের জন‍্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কতৃপক্ষের এই অমানবিক ব‍্যবহারে তারা ক্ষিপ্ত। তারা জানতে চায় মৃত যুবকের চিকিৎসা পদ্ধতিতে ঠিক কি কি ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল? অভিযোগ এই সময়ই মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যরা এমারজেন্সি বিভাগের কর্মরত সরকারি নিরাপত্তা রক্ষী নরেশ তাঁতিকে মারধর করা হয়েছে।


যদিও, মৃত যুবকের পরিবারের সদস্য অভিযোগ মানতে চায়নি জেলা হাসপাতাল কতৃপক্ষ। তাদের তরফে বলা হয়েছে, ঐ যুবককে যখন এমারজেন্সি বিভাগে পুলিশ নিয়ে তখন তার মৃত্যু হয়েছে। নিয়ম মেনে তখন চিকিৎসক তাকে ” ব্রডডেথ ” ঘোষণা করেন। তারপরেও পরিবারের সদস্যদের চাপে চিকিৎসক তিনবার পরীক্ষা করেন। জেলা হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানায়, এরপরেও পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্ত করা হবে।
এদিকে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানায়, কোন অভিযোগ পরিবারের তরফে দায়ের করা হয়নি। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

Leave a Reply