ASANSOL

বাড়িতে একা থাকা বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনার কিনারা, দুমাস পরে গ্রেফতার ১ অভিযুক্ত, খোঁজ আরো ২ সঙ্গীর

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ বাড়িতে একা থাকা এক বৃদ্ধা খুনের ঘটনার কিনারা করলো আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। প্রায় ২ মাস পরে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা অন্যতম ১ অভিযুক্তকে। ধৃতর আরো ২ সঙ্গীরও খোঁজ করছে পুলিশ। তাদের নাম হলো সুরজ হাজরা ও জগ্গু। এর মধ্যে সুরজ প্লাম্বারের কাজ করে। বাকি দুজন কোন কাজ করেনা। এই দুজন ফেরার রয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় বিশাল বাউরিকে। তদন্তের স্বার্থে ঐদিনই পুলিশ তাকে ১৪ দিনের হেফাজত চেয়ে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ কর। বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। শুক্রবার দুপুরে আসানসোল দক্ষিণ থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা বলেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনেয়াল। ছিলেন এসিপি (সেন্ট্রাল) দেবরাজ দাস, আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু ও আসানসোল দক্ষিণ থানার ( পিপি) ওসি সঞ্জীব দে।


প্রসঙ্গতঃ, গত ২২ মে সোমবার রাতে এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছিলো আসানসোল দক্ষিণ থানার জিটি রোড লাগোয়া সূর্য সেন পার্কে। পরের দিন ২৩ মে মঙ্গলবার সকালে বাড়ির ভেতর থেকে বৃদ্ধার নাম আলপনা রায় (৬৭) নামে ঐ বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছিলো পুলিশ। আসানসোল জেলা হাসপাতালে বৃদ্ধার মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করার পরে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জেনেছিলো, বৃদ্ধার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বৃদ্ধার মাথায় ভারী কোন জিনিস দিয়ে মারা হয়েছে। তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে কোন এক সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে। পরে দিল্লিতে থাকা বৃদ্ধার ছেলে সনৎ রায় আসানসোলে এসে আসানসোল দক্ষিণ থানা (পিপি) য় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর একটি খুুুুনের মামলা করে তদন্তে নামে। কিন্তু তেমন কোন ক্লু পুলিশের হাতে আসছিলো না। প্রতিবেশীরাও কিছু তেমন বলতে পারছিলো না। শেষ পর্যন্ত ঐ এলাকায় একা থাকা এক বৃদ্ধর বাড়িতে অন্য একটি ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ এই খুনের ঘটনার সূত্র পায়। তারপরে আসে সফলতা।


শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) বলেন, প্লাম্বার সুরজ হাজরা ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে বৃদ্ধার বাড়িতে কাজ করতে যায়। তখন ঐ বাড়ির সবকিছু দেখেছিলো। এরপর সে ও তার দুই সঙ্গী প্ল্যান করে। কি ভাবে তা করবে, তার ” রেকি” ও করা হয়। এরপর ২২ মে রাতে ঐ বাড়ির পেছনে ঢুকে লুকিয়ে ছিলো। একটা বৃদ্ধা পেছনের কাঠের দরজা ও গ্রিল গেট খুলে বেরোয়। কিন্তু ঢোকার সময় তিনি গ্রিল গেট লাগিয়ে দরজা বন্ধ না করে বাড়ির ভেতরে চলে যান। তিনি আরো বলেন, সেই সুযোগে এই তিনজন গেট খুলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে। আলমারিতে ৪০ হাজার টাকা ছিলো। সুরজ তা বার করছিলো। তা বৃদ্ধা দেখে ফেলেন। তখন তারা প্রমাণ লোপাটের জন্য বৃদ্ধার মাথায় লোহার রড দিয়ে মারে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে, তারা বৃদ্ধার গায়ে থাকা সোনার গয়না খুলে নিয়ে পালায়। ধৃত সবকিছু স্বীকার করেছে। বাকি দুজনের খোঁজ চলছে।

Leave a Reply