RANIGANJ-JAMURIA

রানিগঞ্জে বিজেপির রাজ্য সভাপতির আক্রমন শাসক দলকে, বালি, কয়লা পাচার করলে ইডি ও সিবিআই ধরবেই

বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জি ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ কয়লা, বালি ও গরু পাচার করলে আজ নয়তো কাল ধরা পড়বেই। সিবিআই ও ইডি তাদেরকে ধরবেই। কেউ পার পাবেনা। শনিবার বিকেলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন ময়দানে দলের এক জনসভা থেকে এইভাবেই কারোর নাম না করে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এদিনের সভা থেকে তিনি আসানসোল দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে শিল্পের অবস্থা, বিদ্যুৎ সহ নানা ইস্যুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীদের সমালোচনা করেন।


তিনি আরো বলেন, দেখেছেন তো রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের কি অবস্থা। তাকে ইডি দিল্লি ডেকে পাঠাচ্ছে। আর উনি একবার আদালত ও একবার হাসপাতালে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন লাভ নেই। এই আসানসোল দূর্গাপুর একটা সময় শিল্পের ভূমি ছিলো। এখন এই শিল্পাঞ্চলের কি অবস্থা। গত ১২ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে নতুন কোন শিল্প করতে পারেনি। উল্টে যা পুরনো ছিলো বন্ধ করে দিয়েছে। আর অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে দেখুন। কেন্দ্র সরকার দূর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও বার্ণপুর ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। দূর্গাপুরের জন্য শুধু ৩৬ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। কেন্দ্র সরকার এই এলাকার বেকার ছেলেমেয়েদের কথা ভাবে। আর এই রাজ্যের সরকারকে দেখুন। বর্তমানে রাজ্যের বর্তমান বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে সুকান্ত মজুমদার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জ্যোতি বসুর আদর্শ ছাত্রী। তার সময় বাংলার হ্যারিকেন জ্বেলে রাখতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় যা হচ্ছে, তা সেই দিকেই যাচ্ছে। সবক্ষেত্রেই বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম লাগামছাড়া বৃদ্ধি হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুতের ডিসকানেকশানের পরে নতুন করে কানেকশন নিলে আগে ১০০ টাকা লাগতো। এখন ৫০০ টাকা লাগে।


তিনি বলেন, চন্দ্রযান দেখিয়েছে চাঁদের জমিতে বালি রয়েছে। বাংলার তৃণমূল নেতারা এখন আলোচনা করছেন এবারে তারা চাঁদে গিয়ে বালি চুরি করবেন। শনিবারের সভা থেকে সুকান্ত মজুমদারও, শুক্রবারে পাণ্ডবেশ্বরের শীতলপুরের সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি দাবি করেন, শাসক দলের জেলা সভাপতি এখানে টাকা তুলে কালীঘাটে পাঠাচ্ছেন। রানিগঞ্জকে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, এবার বিজেপি প্রার্থীকে এই এলাকা থেকে ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী করাবো ।


এদিনের এই সভায়, আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারির দাবি রানিগঞ্জ শহরকে বারংবার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আমার তৃণমূলে থাকার সময় আমাকে দিয়ে বলানো হয়েছিলো রানিগঞ্জকে মহকুমা শহর করে দেওয়া হবে। কিন্তু বারংবার সে বিষয়ে বলার পরেও রানিগঞ্জ শহরকে আসানসোল পুরনিগমের সঙ্গে যোগ করা হয়। আবার রানিগঞ্জকে মহকুমা করা হবে আশ্বাস দিয়ে, বঞ্চিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিজেপি যদি এই এলাকায় ক্ষমতায় আসে, তাহলে এই রানিগঞ্জ, জামুরিয়া, অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর এলাকাকে একযোগে শামিল করে এই রানিগঞ্জ এলাকাকে একটি মহকুমা হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি, নতুন একটা পুরনিগম করা হবে এই চারটি এলাকাকে নিয়ে। এদিনের এই জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল দক্ষিণ ও দূর্গাপুরের দুই বিধায়ক তথা বিজেপির রাজ্য সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল ও লক্ষণ ঘোড়ুই, জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন জেলা সভাপতি দিলীপ দে, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়।


পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিরোধী দলের তৈরি করা “ইন্ডিয়া ” কে কটাক্ষ করেন। তার কথায়, এটাকে ইন্ডিয়া জোট বলা হচ্ছে। কিন্তু শেষের শব্দ বা ওয়ার্ড হচ্ছে ” এ”। এ মানে তো এলায়েন্স বা জোট। বিরোধী দলেররা বলছে এটা জোট। তাহলে পাশাপাশি দুটো এ তো নেই। তার মানে এটা ” ইন্ডি “। ইন্ডিয়া নয়।

Leave a Reply