ASANSOL

বার্ণপুরের ঘটনা, ইস্কো কারখানার চৌবাচ্চা থেকে নিখোঁজ যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ থাকা এক যুবকের পচাগলা মৃতদেহ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বার্ণপুরে ইস্কো কারখানা বা সেইল আইএসপির ভেতরে একটি জল ভর্তি চৌবাচ্চা থেকে উদ্ধার হলো। শনিবারের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইস্পাত নগরীতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে মৃতদেহটি অঙ্গাত পরিচয় হিসাবে ছিলো। পরে বাড়ির লোকেরা খবর পেয়ে এসে সেই যুবকের মৃতদেহটি সনাক্ত করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত যুবকের নাম হায়দার খান ওরফে টিঙ্কু (৩৭)। মৃত যুবকের বাড়ি হিরাপুর থানার বার্ণপুরের করিমডাঙ্গাল মসজিদ সংলগ্ন এলাকায়। রবিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যুবকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। এরপর পুলিশ মৃতদেহটি বাবা ফারুক খানের হাতে তুলে দেন।


প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, কোন ভাবে ইস্কো কারখানার ভেতরে সিও এন্ড সিসি ডিপার্টমেন্টের অধীন ব্যাটারী সিওবি নঃ ০৮ ওয়ার্সের সংরক্ষিত এলাকায় একটি বড় চৌবাচ্চার মধ্যে পড়ে গিয়ে জলে ডুবে ঐ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ভিসেরা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলেই জানা যাবে সঠিক মৃত্যুর কারণ। পুলিশ এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে। মনে করা হচ্ছে, ঐ এলাকাটি ওয়ার্কিং প্লেস নয়। সেই কারণে ঐ এলাকায় তেমন ভাবে কেউ যায় না। জঙ্গলে ভরে গেছে। শনিবার সকালে জনা চারেক কর্মী যাওয়ায় তারা মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন।

জানা গেছে, হিরাপুর থানার বার্ণপুরের করিম ডাঙ্গাল মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা হায়দার খান ওরফে টিঙ্কু গত ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। বাড়ির লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার হদিশ পাননি। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর ফারুক খান ছেলের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কথা বলে হিরাপুর থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করেন। তারপরেও হায়দারের কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি।


এদিকে, শনিবার সকালের দিকে বার্ণপুরের ইস্কো কারখানার ভেতরে সিও এন্ড সিসি ডিপার্টমেন্টের অধীন ব্যাটারী সিওবি নঃ ০৮ ওয়ার্সের সংরক্ষিত এলাকায় একটি বড় চৌবাচ্চার জলের মধ্যে এক যুবকের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন কর্মীরা। পচেগলে যাওয়ায় মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিলো।স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সিও এন্ড সিসি ডিপার্টমেন্টের এজিএম গোটা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে হিরাপুর থানায় জানান। সেই খবর পেয়ে পুলিশ ইস্কো কারখানায় যান। মৃতদেহটি চৌবাচ্চা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবিবার সকালে খবর পেয়ে হায়দার খান ওরফে টিঙ্কুর বাবা ও স্ত্রী রেশমা খাতুন আসানসোল জেলা হাসপাতালে এসে সেই দেহ সনাক্ত করেন।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরিবারের তরফে নতুন করে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
তবে, ইস্কো কারখানার ভেতরে কি করে ঐ যুবক ঢুকলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তেমনি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও।

Leave a Reply