ASANSOL

আসানসোল শহরে মার্কেট কমপ্লেক্সের পরে ম্যারেজ হল, বেআইনী নির্মাণ ভাঙলো পুরনিগম

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল শহরে মার্কেট কমপ্লেক্সের পরে এবার ম্যারেজ হল। বৈধ নকশা বা প্ল্যান ছাড়াই নির্মাণ করায় বেআইনি ম্যারেজ হলের একাংশ ভাঙলো আসানসোল পুরনিগম। সপ্তাহ শুরু প্রথম দিন সোমবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসানসোল শহরের এসবি গরাই রোডের ইসমাইলের বীর রামমোহন ব্যানার্জী বা বিআরএমবি রোডে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই বেআইনি নির্মাণ ভাঙাকে কেন্দ্র করে যাতে কোন রকম সমস্যা বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তারজন্য এলাকায় হিরাপুর থানার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিলো। আসানসোল পুরনিগমের তরফে গোটা বিষয়টি দেখার ছিলেন দুই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আরকে শ্রীবাস্তব ও অচিন্ত্য অধিকারী, আইনী উপদেষ্টা সুদীপ্ত ঘটক সহ পুরনিগমের আধিকারিক ও কর্মীরা।
জেসিবি মেশিন দিয়ে ম্যারেজ হলের পেছনের অংশ ভাঙার পরে মালিক সুরেশ রাম ও পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে এদিনের মতো তা স্থগিত করা হয়। ম্যারেজ হল মালিক পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ার ও আইনী উপদেষ্টাকে বলেন, জরিমানার কিছু টাকা (২ লক্ষ) তারা দেবেন। হল মালিককে বলা হয়েছে, তিনি যেন মঙ্গলবার সকাল এগারোটা নাগাদ আসানসোল পুরনিগমে গিয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। মেয়র যা বলবেন বা নির্দেশ দেবেন তেমন করা হবে।


জানা গেছে, আসানসোলের ইসমাইলের বিআরএমবি রোডের এই ভবনে আগে গ্রাউন্ড ফ্লোরে চারটি দোকানঘর ও প্রথম তলায় রেসিডেন্সিয়াল রুম ছিলো। পরে ভবনটিকে সম্প্রসারণ করে ম্যারেজ হল করা হয়। যদিও এরজন্য পুরনিগমের তরফে কোন অনুমতি সহ বৈধ নকশা বা প্ল্যান নেওয়া হয়নি। গোটা বিষয়টি অভিযোগ আকারে আসানসোল পুরনিগমের কাছে জমা পড়ে। পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে, সেই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। এরপর ম্যারেজ হল মালিক সুরেশ রামকে নোটিশ দিয়ে শুনানিতে ডাকা হয়। কিন্তু সেই শুনানিতে হল মালিক এই ভবনের পেছনের অংশ নির্মাণের জন্য কোন বৈধ নকশা বা প্ল্যান দেখাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত গত জুলাই মাসে এই নির্মাণকে বেআইনী বলে নোটিশ করা হয়। হল মালিককে এই নির্মাণের জন্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু তিনি তা দেওয়ার ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখাননি।
শেষ পর্যন্ত সোমবার বেলা বারোটা নাগাদ পুরনিগমের দুই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও আইন উপদেষ্টা পুর কর্মীদেরকে নিয়ে এলাকায় পৌঁছে যান।


অভিযোগ, সেই সময় হল মালিক ও তার পরিবারের সদস্যরা নানা ধরনের বিভ্রান্তি মুলক কথা বলেন। সরাসরি কাজে বাধা না দিলেও তারা সময় নষ্ট করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত জেসিবি মেশিন দিয়ে বেলা তিনটে নাগাদ ভবনের পেছনের বেআইনি নির্মাণ ভাঙা শুরু হয়। তখন হল মালিক ও তার পরিবারের সদস্যরা এসে অনুরোধ করেন না ভাঙার জন্য।
পুরনিগমের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আরকে শ্রীবাস্তব বলেন, মেয়রের নির্দেশ মতো এই ভবনের বেআইনী নির্মাণটা ভাঙা হবে। জরিমানা হিসাবে ৭০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু তা দেওয়া হয় নি এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ, আগেই আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, পুর এলাকায় কোন বেআইনি নির্মাণ বরদাস্ত করা হবেনা। কোথাও কোন অভিযোগ পেলে তা সরজমিনে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা গেছে, পুর এলাকায় প্রায় ১০০ টিরও বেশি বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। ১০ টির মতো নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। বেশি কিছু ক্ষেত্রে শুনানি হয়েছে।

Leave a Reply