ASANSOL

আসানসোলে আয়কর হানা, বিরোধী দলনেতার দাবি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা, পাল্টা আক্রমণ শাসক দলের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, আসানসোলে আয়কর দফতরের অভিযানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ইমতিয়াজ আলির ( তবে আসল নাম সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ) বাড়ি থেকে ১০০ কোটি টাকারও বেশি নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। টানা তিনদিন তল্লাশির পরে এখনো পর্যন্ত আয়কর দপ্তরের তরফে কোন প্রেস বিবৃতি দেওয়া হয়নি এই হানা নিয়ে। তারমধ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই দাবি নিয়ে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে শাসক দলের সঙ্গে বিরোধী দলের রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তার এই দাবির প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতার মাথার ঠিক নেই বলে রবিবার সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন তৃনমুল রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু।


প্রসঙ্গতঃ, কলকাতার আয়কর দপ্তর থেকে আসা আধিকারিকদের একটি দল যা গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরবেলা থেকে শুরু করে প্রায় তিন দিন ধরে আসানসোল ও বার্ণপুরে কমপক্ষে সাতটি জায়গায় হানা দিয়ে তল্লাশি চালায়। যা সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। সবারই মনে হঠাৎ কি হলো যে, আসানসোলের রানিগঞ্জের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক বার্ণপুরের রহমতনগরের বাসিন্দা মহঃ সোহরাব আলি, ধরমপুরের বাসিন্দা স্ক্র্যাপ বা ছাঁট লোহার কারবারি সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ আসানসোলের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ও প্রোমোটার মহেন্দ্র শর্মা বাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা পৌঁছেছে।

সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদকে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তেমনটা দেখা যায় না। তবে সবাই জানেন যে তিনি এই শিল্পাঞ্চলের প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের ঘনিষ্ঠ। এমন পরিস্থিতিতে আয়কর অভিযানের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের এক কাউন্সিলর সহ তৃণমূলের অনেক নেতা ও কর্মীদেরকে দিনরাত ইমতিয়াজ আহমেদের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছিলো। তবে তারা কেউই মিডিয়ার সামনে বিবৃতি দেননি।
আয়কর দপ্তরের দল তল্লাশি শেষ করে তিন দিন পরে ফিরে যান।


তার মধ্যে হঠাৎই উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে নিউজলপাইগুড়ির সভায় খোলা মঞ্চ থেকে শনিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেন যে, আয়কর দপ্তর আসানসোলে অভিযান চালিয়েছে। আমি এদিনই আসানসোল থেকে খবর পেয়েছি সেই অভিযানে আয়কর আধিকারিকরা তৃণমূল নেতা ইমতিয়াজ আলির বাড়ি থেকে ১০০ কোটিরও বেশি নগদ টাকা খুঁজে পেয়েছেন। যা আয়কর দপ্তরের দল বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গেছে। স্বাভাবিক ভাবেই শুভেন্দুর এই বক্তব্য তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।


রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু একাংশ সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বলেন, ইমতিয়াজ আহমেদ একজন ব্যবসায়ী। এমনকি তার সঙ্গে তৃণমূলের দূরেরও কোন সম্পর্ক নেই। তার দাবি, শুভেন্দু অধিকারী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মাথার ঠিক নেই। তার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। তিনি যে কাউকে তৃণমূলের লোক বলছেন। এটা অন্যায়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, এসব বলে তিনি শুধু তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টাই করছেন, এমনটা নয়। তিনি ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে দলের নাম জড়িয়ে সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তৃনমুল নেতা বলেন, এই অভিযান নিয়ে তো আয়কর দপ্তর কোন অফিসিয়াল বিবৃতি দেয়নি। তাহলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানলেন কি করে যে ঐ অভিযানে কি পাওয়া গেছে? তবে কি তিনি আয়কর দপ্তরের মাথায় বসে আছেন?

Leave a Reply