ASANSOL

আসানসোলের মানুষ পরিসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত, ২৪ এর আগে প্রতিবাদ সভা করে ক্ষমতা প্রদর্শন বিজেপির

“রাম” নামের ভয়ে পালিয়েছে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র : জিতেন্দ্র তেওয়ারি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( Asansol Live News Today ) “রাম” নামের ভয়ে পালিয়েছে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। এমনই কথায় আসানসোল পুরনিগমের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরের বিজেপির প্রতিবাদ সভা থেকে শহরের রাজনৈতিক আবহাওয়া উত্তপ্ত হলো। বলা ভালো যে, ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে আসানসোল পুরনিগমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতা জাহির করলো পদ্ম শিবির। যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস অবশ্য বিজেপির এদিনের কর্মসূচিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চায়নি।
আসানসোল পুরনিগমে নাগরিক পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, হোর্ডিং, অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে পুরনিগম কতৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেওয়া সহ ২২ টি দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল পুরনিগমের সামনে এই প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছিলেন বিজেপি কাউন্সিলারদের দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারি।

বেলা বারোটার সময় আসানসোল শহরে তিনটি জায়গা জিটি রোডের গীর্জা মোড় ও পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় এবং রেলপারের আসানসোল স্টেশনের ৭ নং প্লাটফর্ম লাগোয়া ময়দান থেকে তিনটি মিছিল আসানসোল পুরনিগমের সামনে আসে। দুপুর একটার সময় সভা শুরু হলে একে একে বক্তব্য রাখেন দুই রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় ও দেবতনু ভট্টাচার্য, চৈতালি তেওয়ারি, প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি, মাইনরিটি সেলের ইনচার্জ মেহেফুজা খাতুন ও জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি গোটা সভাটি পরিচালনা করেন। বিজেপি নেতা, কর্মী সমর্থকদের ভিড় ও জমায়েত আসানসোল পুরনিগমের সামনের অংশ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল।


সব বক্তারাই আসানসোল পুরনিগম নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমন করে। মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয় আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে আসানসোল পুরনিগমের ওয়ার্ড ভিত্তিক ক্যাম্প করা হবে। সাধারণ মানুষের পরিষেবা নিয়ে অভাব অভিযোগ শোনা হবে। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুধু তাই নয়, আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় মানুষ পুর পরিসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে দাবি তাদের। উঠে আসে বিভিন্ন দুর্নীতির কথা। সভা থেকে জিতেন্দ্র তেওয়ারি, চৈতালি তেওয়ারি ও কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়েরা হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি বদল না হলে, স্বচ্ছতা সামনে না এলে আরো বড় আন্দোলন করা হবে আগামী দিনে।
মেয়র না থাকায় সভা চলাকালীন বিজেপির কাউন্সিলারদের তরফে গৌরব গুপ্ত একাই পুর ভবনে গিয়ে রিসিভিং কাউন্টারে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দিয়ে আসেন।

বিজেপি যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন : ডেপুটি মেয়র


যদিও আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুরনিগমের পরিষেবা মানুষ পাচ্ছেন কি, পাচ্ছেন না সেটা মানুষ ঠিক করবে। মানুষের আশীর্বাদে মা মাটি, মানুষের সরকার রাজ্যে আছে। আসানসোল পুরনিগম আছে। জাতি ও ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করছে শান্ত বাংলাকে অশান্তি করার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রের শাসক দল। এদিনের মেয়রের না থাকা নিয়ে ডেপুটি মেয়র বলেন তিনি অসুস্থ। তাই তিনি অনুপস্থিত। এদিন নয়, গত কয়েকদিন ধরে তিনি আসছেন না। বিজেপির যদি ডেপুটেশন দেওয়ার সদিচ্ছা থাকতো, তাহলে আমরা যারা ছিলাম, তাদেরকে দিতো পারতো। তিনি আরো বলেন, অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। বিজেপি যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি আসানসোলে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এটা আলাদা ব্যাপার যে বিজেপি সেই উন্নয়ন দেখছে না।
এদিনের বিজেপির আসানসোল পুরনিগমে প্রতিবাদ সভার জন্য পুলিশ বন্দোবস্ত ছিলো চোখে পড়ার মতো। সভা মঞ্চ লাগোয়া গেট বন্ধ করে তা সামনে লোহার ব্যারিকেড দেওয়া হয়। তবে এদিনের সভা ও মিছিলে যে এতটা ভিড় হবে, তা পুলিশ আধিকারিকরা আন্দাজ করতে পারেননি। তাই বড় কোন কিছু না হওয়ায় পুলিশ আধিকারিকরা দুপুর দুটোর পরে সভা শেষ হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন।

Leave a Reply