BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

পুরনো পেনশন চালু করার দাবিতে এবং নতুন পেনশন নীতির প্রতিবাদে ৫০ বছর পর আবার রেল ধর্মঘটের ডাক

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল : ( Rail Strike Called by unions ) রেল কর্মীসহ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পুরনো পেনশন চালু করার দাবিতে এবং নতুন পেনশন নীতির প্রতিবাদে আগামী ১লা মে দেশজুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য রেল ধর্মঘটে ডাক দিল দেশের সর্বভারতীয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃত রেলওয়ে সংগঠন ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রেলওয়ে (এন এফ আই আর )এবং অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেন্স ফেডারেশন( এ আই আরএফ)। একই সঙ্গে এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে প্রচারে নামলো চিত্তরঞ্জন এর সিটু অনুমোদিত লেবার ইউনিয়ন শ্রমিক সংগঠন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য রেলকর্মীদের তদানীন্তন সময় ৮.৩৩ % বোনাসের দাবিতে ১৯৭৪ সালের ৮ই মে দেশজুড়ে রেল ধর্মঘট শুরু হয়েছিল এবং ২৮ সেই মে রেল কর্মীদের দাবি তখন মেনে নেয়াতে এদিন ধর্মঘট শেষ হয়। ওই ধর্মঘটে ঠিক ৫০ বছর পর আবার নতুন করে ১
লা মে রেল ধর্মঘটের ডাক দেয়া হলো


এন এফ আই আর এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এম রঘুভাইয়া বলেন ২০০৪ সালের ১লা জানুয়ারির পর থেকে রেলসহ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের নতুন পেনশন নীতি বাতিলের জন্য ইতিমধ্যেই তারা তাদের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সারাদেশে রেল কারখানা এবং জোনাল রেলওয়ের কর্মীদের মাধ্যমে ধর্মঘটের জন্য ব্যালট নিয়েছিলেন । সেই ব্যালটে প্রায় ১০০% শ্রমিক পুরনো পেনশন নীতি চালুর দাবিতে ধর্মঘটে যাবার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল । এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ লা মে থেকে দেশ জুড়ে রেল ধর্মঘটের ডাক দেয়া হচ্ছে । এর মধ্যে শুধু জোনাল রেলওয়ে ট্রেন চলাচল নয়, রেলের কারখানা গুলি ও ধর্মঘটে সামিল হবে। এই ধর্মঘট হলে দেশের লাইফ লাইন রেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।


অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেন্স ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক এবং জয়েন্ট ফোরাম ফোর রেস্টোরেশন অফ ওল্ড পেনশন স্কিমের সংগঠনের আহবায়ক শিউগোপাল মিশ্র বলেন বারবার বিষয়টি ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীদের নজরে আনা হলেও এ বিষয়ে তারা কোন ইতিবাচক ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেশ জুড়ে ১ লা মে শ্রমিক দিবসের দিন থেকেই ভারতীয় রেলকে অচল করতে ধর্মঘটে নামা হবে। শুধু ভারতীয় রেল নয় তিনি বলেন যেখানে যেখানে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের নতুন পেনশন নীতি চালু হয়েছে সেখানেই এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। শিউগোপাল মিশ্র বলেন ভারতবর্ষের রেলের যেসব জায়গায় তাদের সংগঠন আছে সেখানেই ইতিমধ্যে তাদের ১৮ শতাংশ শ্রমিক ধর্মঘটে যাওয়ার রায় দিয়েছিলেন। এজন্য আগামী ১৯ শে মার্চ রেলের বিভিন্ন জায়গা দায়িত্বে থাকা জেনারেল ম্যানেজারদের কাছে এবং অন্যান্য সংগঠনগুলিও তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছে ধর্মঘটে নোটিশ দেবে। তিনি বলেন সরকারের নতুন পেনশন নীতিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা ।এই কারণেই ১ লা মে শ্রমিক দিবসের দিন থেকেই দেশজুড়ে এই ধর্মঘট পালনের মধ্যে দিয়ে সারা ভারতবর্ষের রেল চলাচল সহ সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে অচল করে দেওয়া হবে। এই ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে বলেও তিনি জানান।


অন্যদিকে চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার সিটু অনুমোদিত লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজিব গুপ্ত বলেন আমরা এখানে এন এফ আইআর ,এআইআরএফ, রেলওয়ে এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন এবং আমাদের ইউনিয়নকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে  এই ইস্যুতে ধর্মঘটের জন্য যে ব্যালোটে ভোট নেওয়া হয়েছিল তাতেই প্রায় ৯৯% ও কর্মচারী ভোটের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। ১ লা মে থেকে রেলের এই ধর্মঘটে  যেমন পুরনো পেনশন নীতি কে নতুন করে কার্যকরী করার দাবি জানানো হচ্ছে। তেমনি আমরা এই ধর্মঘটের সাথে আরেকটি দাবিকে যুক্ত করতে চাইছি। সেটি হল গোটা দেশ জুড়ে রেলের যে ব্যাপকভাবে বেসরকারি করনের কাজ চলছে এবং হাজার হাজার রেল শ্রমিকদের শূন্য পদ বছরের পর বছর ফেলে রাখা হয়েছে তার পূরণ করা ও বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করা হোক এই ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে। আমরাও আলাদা করে ১৯ শে মার্চ আমাদের পক্ষ থেকে রেল কর্তৃপক্ষকে ধর্মঘটের নোটিশ দেব। চিত্তরঞ্জনের রেল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও  এই ধর্মঘটকেই সমর্থন করে একই মন্তব্য করেছেন।

Please like share and subscribe our channel for video news

https://youtube.com/@Bengal_Mirror?si=WE5w4kLijnANZHZX

Leave a Reply