RANIGANJ-JAMURIA

রানীগঞ্জে ৩ দুষ্কৃতি মূলক ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯, বাজেয়াপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : ৩ দুষ্কৃতীমূলক ঘটনায় ৯ জন অভিযুক্ত গ্রেপ্তার, উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র সহ চুরি যাওয়া বিভিন্ন সামগ্রী। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের রানীগঞ্জ থানার পুলিশ, রানীগঞ্জের পৃথক তিন স্থান থেকে, তিন পৃথক দুষ্কৃতিমূলক ঘটনায় সচেতন হয়ে, নজরদারি চালিয়ে পেল ব্যাপক সফলতা।
৩ টি ঘটনায় রানীগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়ি এলাকায় ঘটার পর, পুলিশি তৎপরতায় দুষ্কৃতীদের ধরতে সফল হয় প্রশাসন।



এর মধ্যে একটি ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করার ঘটনায় উড়িষ্যার পাঁচ দুষ্কৃতিকে একটি  নাইন এমএম পিস্তলসহ ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ একটি ধারালো অস্ত্র ও একটি ড্রেগার সহিত গ্রেফতার করে। ধৃতদের সঙ্গে থাকা একটি জিপ গাড়ি ও একটি ফোর্ড গাড়ি আটক করে পুলিশ। ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় গভীর রাত্রে রানীগঞ্জ থানার পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়ির আইসি রবীন্দ্রনাথ দলুই ও তার সহযোগী অফিসার লোকেশ দাস নাইট পেট্রোলিং করছিলেন, সেই সময়ই বাঁশড়া মোড়ের কাছে, শ্রীরাম ট্রেনিংয়ের সামনে বেশ কিছু ট্রাকের আড়ালে সন্দেহভাজন পাঁচ ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে পুলিশ, তাদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায়, পুলিশ তাদের তল্লাশি করতেই মেলে বড়সড় সফলতা। ধৃতদের তল্লাশীর সময় তাদের কাছে থাকা ওই অত্যাধুনিক 9 এমএম পিস্তল, তিন রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ধারালো অস্ত্র সহ বেশ কিছু সামগ্রী উদ্ধার করে পুলিশ। সূত্র মোতাবেক জানা যায় ধৃতরা রানীগঞ্জ অঞ্চলে কোন এক ব্যক্তির বাড়িতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বাঁশড়া অঞ্চলে জড়ো হয়েছিল। ধৃতরা প্রত্যেকেই উড়িষ্যার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। যার মধ্যে রয়েছে বছর ২৩ এর উড়িষ্যার গঙ্গাপুরের বাসিন্দা মনোজ কুমার বাদাত, বছর ২৮ এর উড়িষ্যার গঞ্জাম এলাকার বাসিন্দা নিসাকর ডাকুয়া, বছর ২৯ এর গঞ্জাম এলাকার বাসিন্দা মিঠুন সোয়াইন, সেই একই এলাকারই বাসিন্দা বছর ২৮ এর বলরাম ভোলা ও বছর ৩২ এর উড়িষ্যার সম্বলপুরের বাসিন্দা, সুকান্ত কুমার সোয়াইন। ধৃতরা ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করতে মঙ্গলপুর শিল্প তালুকের ওই অংশে জড়ো হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে জানার জন্য ধৃতদের পুলিশ আসানসোল আদালতে হাজির করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানালে বিচারক ধৃতদের আগামীতে জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন।



সেখানেই ১১ তারিখ রানীগঞ্জের সিয়ারসোল গ্রামের ও সি পি এলাকা থেকে এক বাড়ির মধ্যে চার্জে দেওয়া চারটি টোটো গাড়ির ব্যাটারি চুরির অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে সেই এলাকারই কালীমন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বছর বাইশের বিজয় কেওড়া, বছর ১৯শের তোতন বাদ্যকর ও বছর  ২৮ এর সুরজ পান্ডে কে। পুলিশ বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে নানান তথ্য সংগ্রহের পর এই তিন অভিযুক্ত কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই অংশে খনি আবাসনের পাশে থাকা এক জঙ্গলে লুকিয়ে রাখা চারটি লিথিয়াম ব্যাটারি উদ্ধার করে। পুলিশ ধৃতদের এই চুরির ঘটনা সংঘটিত করার অপরাধে তাদের আসানসোল জেলা আদালতে হাজির করে, আগামীতে তারা আরো অন্য কোন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানার জন্য আবেদন জানালে, বিচারক ধৃতদের পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন। এখন দেখার এই ধৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আগামীতে আরো অন্য কোন চুরির কিনারা করতে পারে কিনা পুলিশ।



সেখানেই তৃতীয় দুষ্কৃতি মূলক ঘটনা ঘটার দীর্ঘ একটা সময় পর নকল পরিচয় পত্র তৈরির জন্য এক যুবকের খোঁজ পেয়ে হার ছিনতাইয়ের অভিযোগে মুর্শিদাবাদের, সাগরদিঘী এলাকার বছর ২৮ মোহাম্মদ আলী জিন্না নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পেলে বড়সড় সফলতা। পুলিশ নানান তথ্য তল্লাশ করে, ধৃত ওই ব্যক্তিকে রানীগঞ্জের খাটু শ্যাম মন্দিরে এক টোটোয় করে আসা মহিলা দর্শনার্থীর হার ছিনতায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ধৃত ঐ ব্যক্তি এ দিন পুলিশি হেফাজত থেকে আদালতে যাওয়ার সময় সংবাদ মাধ্যমের কাছে তার ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা স্বীকার করে সে এই ছিনতাই কিভাবে সংঘটিত করেছিল সে বিষয়ে স্ববিস্তারে ব্যাখ্যা করেন। পুলিশ ধৃতকে আসানসোল জেলা আদালতে তুলে আগামীতে তাকে আরো কোন দুষ্কৃতীমূলক ঘটনার সঙ্গে সে যুক্ত রয়েছে কিনা তা জানার জন্য বিচারকের কাছে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের সময়কালে একের পর এক এই দুষ্কৃতি মূলক ঘটনা রুখে দেওয়ায় স্বভাবতই অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে খনি অঞ্চলের মানুষজন। দিকে দিকে পুলিশের কড়া নজরদারিতে এই সকল দুষ্কৃতি মূলক কাজ রুখে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন পুলিশের উচ্চ আধিকারিকেরা। রানীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর বিকাশ দত্ত শহরে দুষ্কৃতিমূলক ঘটনা রোখার জন্য চারিদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা সঠিক করার সাথেই, পুলিশের পি সি পার্টির নজরদারির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন, জারি ফলস্বরূপ একের পর এক এই সফলতা পাচ্ছে পুলিশ, বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

Leave a Reply