আসানসোল সাইবার থানায় অভিযোগ, সোশাল মিডিয়ায় মেয়ের চাকরি খুঁজতে গিয়ে প্রতারিত কুলটির মহিলা
বেঙ্গল মিরর, কুলটি ও আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ সোশাল মিডিয়ায় মেয়ের চাকরি খোঁজ করতে গিয়ে সাইবার অপরাধীদের হাতে প্রতারিত হলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার ডিসেরগড়ের বাসিন্দা এক মহিলা। মৌসুমি চক্রবর্তী নামে ঐ মহিলার কাছ থেকে সাইবার অপরাধীরা মেয়ের চাকরি দেওয়ার নামে বেশ কয়েক দফায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তারপরেও মেলেনি চাকরি । শেষ পর্যন্ত গত ২ ডিসেম্বর আসানসোল সাইবার থানায় গোটা বিষয়টি বলে অভিযোগ জানান মৌসুমী চক্রবর্তী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।




মৌসুমি চক্রবর্তী তার করা অভিযোগে বলেছেন, তিনি সোশাল মিডিয়া ফেসবুকে মেয়ের জন্য চাকরির খোঁজ করছিলেন। সেই খুঁজতে গিয়ে তার হঠাৎই এক বিজ্ঞাপন নজরে আসে। ঐ বিজ্ঞাপনে বেসরকারি ব্যাংকে কর্মী নেওয়ার জন্য কর্মখালির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানে যোগাযোগ করার জন্য একটি নম্বরও দেওয়া আছে। সেইমতো ঐ নম্বরে মৌসুমী দেবী কল করে কথা বলেন। তার সঙ্গে মেয়ের চাকরির সংক্রান্ত বিষয়ে কথা হয়। উল্টো দিকে ফোনে নিজেকে ব্যাংক আধিকারিক অভিজিৎ রায় নামে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি তার মেয়ের চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাসও দেন। এরপর মৌসুমিদেবীকে একটি কিউআর কোড পাঠানো হয়। বলা হয় তিনি যেন এখানে ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৫২০ টাকা পাঠিয়ে দেন। সেইমতো মৌসুমি চক্রবর্তী গত ২ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত চারবারে ঐ টাকা কিউআর কোড মারফত পাঠিয়ে দেন।
এরপরেও আরো টাকা তার কাছ থেকে থেকে বারবার চাওয়া শুরু হয়। কিন্তু তার পক্ষে আর টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি বা তিনি আর টাকা পাঠাননি। এরপর ঐ ব্যক্তি মৌসুমিদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তিনিও যোগাযোগ করতে পারেননি। তখন মৌসুমিদেবী বুঝতে পারেন যে তিনি সাইবার অপরাধী প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন। এরপর গত ২ ডিসেম্বর আসানসোল সাইবার থানায় মৌসুমী চক্রবর্তী অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে (কেস নম্বর ১০০/ ২৪ ) ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বা বিএনএসের একাধিক ধারায় একটি মামলা করে এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সাইবার থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল শিল্পাঞ্চল ইতিমধ্যে সাইবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়ে শেয়ার কেনাবেচার নামে করে ব্যাপক পরিমাণ টাকা খুইয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। এছাড়াও ভুয়ো ইলেকট্রিকের বিল থেকে শুরু করে পুলিশ ও সিবিআইয়ের নাম করে ভয় দেখিয়ে সাইবার অপরাধীরা অনেকের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে প্রতারণা করেছে।
এবার সোশাল মিডিয়ায় বেকার যুবক যুবতীদের বিভিন্ন নামী কোম্পানিতে শূন্য পদে চাকরির নাম করে নতুন পদ্ধতিতে প্রতারণা শুরু করেছে সাইবার অপরাধের চক্র। যার শিকার হলেন, কুলটির বাসিন্দা মৌসুমি চক্রবর্তী।
আসানসোল সাইবার থানার আধিকারিকরা বলেন আমরা মানুষকে বারবার সচেতন করছি, যাতে তারা সাইবার অপরাধীদের খপ্পরে না পড়েন। এই ধরনের কোন বিঞ্জাপন দেখে যোগাযোগ করবেন না। কোন ধরনের হোয়াটস অ্যাপে অপরিচিত কল আসা, কোন লিংক এলেও তা দেখার আগেই নিজে সচেতন হয়ে জেনে নিন সেটি সত্যি কিনা। তা বুঝতে না পারলে সাইবার বিশেষজ্ঞ বা পুলিশের সাহায্য নিন>