নিয়োগ নিয়ে কুলটিতে ধুন্ধুমার, গ্রাম কমিটির সদস্যদের মারধরের অভিযোগ স্থানীয়দের বিরুদ্ধে
বেঙ্গল মিরর, কুলটি, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ ইসিএলের কোলিয়ারিতে বেসরকারি সংস্থায় নিয়োগ নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার চিনাকুড়ি ১ ও ২ নং এলাকায় শুক্রবার সকালে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটলো। নিয়োগের তালিকা জমা দিতে আসা গ্রাম কমিটির সদস্যদের উপর চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগ উঠলো চিনাকুড়ি ১ ও ২ নং কোলিয়ারি এলাকার দুই যুবকের বিরুদ্ধে। এই মারধরে গ্রাম কমিটির বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন জগাই মাহাতো, স্বপন মাহাতো ও বিজয় গরাই। আক্রান্তদের তরফে জগাই মাহাতো হামলাকারী হিসেবে রাজু নুনিয়া ও বড়া নুনিয়া নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গেছে, জগাই মাহাতোদেরকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন গঙ্গা দেবী নামে এক মহিলা ও এক ইসিএল কর্মী। একই এলাকার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।




উল্লেখ্য, কুলটির ইসিএলের চিনাকুড়ি ১ ও ২ নং কোলিয়ারি একটি বেসরকারী সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। সেই বেসরকারি সংস্থা এলাকার ৫০ জনকে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কারা চাকরি পাবে, তারজন্য আগেই একটা গ্রাম কমিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রথম দফায় সেই মতো ৩০ জন বেসরকারি সংস্থার হয়ে চাকরি পেয়েছে। দ্বিতীয় দফায় এই কোলিয়ারিতে আরো ২০ জন স্থানীয় যুবকের নিয়োগে তালিকা জমা করতে আসেন সমস্ত গ্রাম কমিটির সদস্যরা। তারা যখন বেসরকারি সংস্থার অফিসে সেই তালিকা জমা করার আগেই কয়লাখনি চত্বরে সমস্ত গ্রাম কমিটির কয়েকজন সদস্যকে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এমনকি নিয়োগের তালিকার নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই মারধরের ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যেতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ।
এই ঘটনায় কয়েকজন আহত হন। আক্রান্তরা কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশের দ্বারস্থ হন। আক্রান্তদের তরফে জগাই মাহাতো অভিযোগ করে বলেন, এই কয়লাখনিতে চাকরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে সমস্ত গ্রামের মানুষেরা আন্দোলন করেছিলেন। একটি গ্রাম কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে ৩০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। পরে আরও ২০ জন নিয়োগের কথা বলেছিলেন বেসরকারী সংস্থা। আমরা বৃহস্পতিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ২০ জনের তালিকা তৈরি করি। শুক্রবার সেই ২০ জন নিয়োগের তালিকা জমা করতে যাওয়ার সময় এই মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, রাজু নুনিয়া ও বড়া নুনিয়া এই হামলা চালিয়েছে। ওরা আমাদেরকে আটকে তালিকা দেখতে চায়। পরে বেশ কয়েকজনের নাম বাদ দিতে বলে। কিন্তু আমরা বলি আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন কারোর নাম ঢোকাতে বা কাটতে গেলে হবে না। তখন ওরা হামলা চালায়। কোমরের বেল্ট খুলে মারা হয়েছে। এমনকি পাথর তুলে মারতে গেছিলো এক যুবক। খবর পেয়ে পুলিশ আসার আগেই যুবকেরা পালিয়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, ঐ কোলিয়ারি এলাকায় একটা ঘটনা ঘটেছে। দুই যুবকের নামে মারধর করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তারা পলাতক। তদন্ত শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, কোলিয়ারির বরাত পাওয়া বেসরকারি সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, এখন আর কাউকে নিয়োগ করা হবেনা। আগে গ্রামের মানুষেরা নিজেদের মধ্যেকার ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুক। তারপরে নিয়োগ প্রক্রিয়া আবার হবে।