ASANSOL

আসানসোলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ” ছোটদের ছায়াছবি ” আমন্ত্রণ পত্রে বাদ মেয়র ও চেয়ারম্যানের নাম, ” গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ” কটাক্ষ বিজেপি ও কংগ্রেসের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে ২১ মার্চ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিনের শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। ” ছোটদের ছায়াছবি ” নামের এই সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, শিশু কিশোর একাডেমি ও তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ। সহযোগিতায় রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও আসানসোল ফিল্ম একাডেমি।


আসানসোল রবীন্দ্র ভবনে শুক্রবার সকাল এগারোটার সময় ” ছোটদের ছায়াছবি ” র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক ( ভারপ্রাপ্ত) নরেন্দ্রনাথ দত্তর নামে ১৭.৩.২০২৫ তারিখে একটি আমন্ত্রণ পত্র ছাপা হয়েছে। সেই আমন্ত্রণ পত্র সংবাদ মাধ্যম সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। সেই আমন্ত্রণ পত্রে রাজ্যের তিনজন মন্ত্রী মলয় ঘটক, প্রদীপ মজুমদার ও ইন্দ্রনীল সেন , আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি ও পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলমের নাম রয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে সেই আমন্ত্রণ পত্রে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা মহানাগরিক বিধান উপাধ্যায়ের নাম নেই। পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম বাদ গেছে। আর এইসব নাম না থাকাতে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

এই ইস্যুতে ” গোষ্ঠী কোন্দল” টেনে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে দুই বিরোধী দল বিজেপি ও কংগ্রেস।
সরকারি অনুষ্ঠানের এমন বিড়ম্বনার ধাক্কা সামলে ও অস্বস্তি কাটিয়ে দুই বিরোধী দলকে পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক দল।
অন্যদিকে, আমন্ত্রণ পত্রে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র ও চেয়ারম্যানের নাম না থাকা নিয়ে নিজেদের মতো করে জবাব দিয়েছে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর।
এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, এটা আর নতুন কি ব্যাপার। মন্ত্রী মলয় ঘটকের উদ্যোগে কোন অনুষ্ঠান হলে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র ও চেয়ারম্যান সহ অন্যদের নাম থাকেনা। আবার একইভাবে আসানসোল পুরনিগমের কোন অনুষ্ঠান হলে মন্ত্রীর নাম থাকেনা। রাজ্যের সরকারটাই তো এই রকম ভাবে চলছে। পুরোটাই গোষ্ঠী কোন্দলে ভরে গেছে। সরকারি অনুষ্ঠানেও তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বাংলার মানুষেরা সব দেখছেন।


কংগ্রেস রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি কটাক্ষ করে বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র ও চেয়ারম্যানের নাম ছাপানো হয় নি। এতে স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চলছে। কিন্তু এবার কাগজে কলমে সামনে চলে এসেছে। সোজা কথা, যারা সরকারের তাবেদারী করতে পারবে তাদের নাম ছাপা হবে।
এই বিষয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি অনুষ্ঠান। তার আমন্ত্রণ পত্রে কার নাম আছে এবং কার নেই তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবো। কারণ এটি সরকারের একটি অনুষ্ঠান। এতে তিনি বিরোধীদের তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগকে অস্বীকার করেন। মেয়র বলেন, বিরোধীরা আগে নিজেদের ঘর সামলাক। পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ও এতে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এরকম কোন কিছু নেই। শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের আমন্ত্রণপত্রে দেওয়া ব্যক্তিদের নাম সম্পর্কে অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সরকার মনে করেছে, এদের বাইরে অন্য কারোর নাম দেওয়া যাবে না। যাদের নাম আছে তারা সম্ভবত মেয়র বা চেয়ারম্যানের চেয়ে বেশি কর্মঠ। আমি অবশ্যই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবো।


সরকারের আয়োজনে হওয়া অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র বিতর্কে পশ্চিম বর্ধমান জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক নরেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, মন্ত্রী ও অফিসিয়াল লেভেলে নাম লেখা হয়েছে। তাই সবার নাম দেওয়া হয় নি। আসানসোলের মহানাগরিকের নাম কি দেওয়া উচিত ছিলো? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাহলে অনেকেরই নাম দিতে হতো। আমন্ত্রণ পত্রে খুব অল্প পরিসরে নাম দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *