মাইথনে পিকনিকে থাকবে নজরদারি

আচমকা সালানপুর ব্লকে জেলাশাসক আসেন

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য,আসানসোল: আর কদিন পরেই মাইথনে MAITHON DAM বিভিন্ন এলাকা থেকেই নদীর ধারে এবং জঙ্গলে মানুষ ভিড় জমাবে পিকনিক করতে। আর সেই পিকনিক করার অনুমতি জেলা প্রশাসন DISTRICT ADMINISTRATION দেওয়ার আগেই জেলাশাসক DISTRICT MAGISTRATE পূর্ণেন্দু মাজি নিজে সালানপুরের বিডিও অদিতি বসু, জেলার ডি পি এল ও বুদ্ধদেব পান কে নিয়ে পৌঁছে যান মাইথনের  নদীর ধারে।

এখানে  এইসময়ে যথেষ্ট বেশি জল আছে দেখে তিনি ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেন যেহেতু কোভিড আছে এবং বেশি জল  নদিতে আছে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর সংখ্যক মানুষকে একসাথে যেন পিকনিক করতে একজায়গায় না ঢুকে পড়ে। তার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও তিনি অন্যান্যবার পিকনিকের সময় যেসব নির্দেশগুলি কার্যকরী হয় সেগুলো যেন নিয়মের মধ্যে রাখা হয় তারও উল্লেখ করেন ।যেমন কোনওভাবেই এই জঙ্গল বা নদীর ধারে যারা পিকনিক করতে আসবেন তাদের সাথে ডিজে, থারমোকল ,প্লাস্টিক এসব যেন না থাকে। এলাকাটিও নিয়মিত যাতে আবর্জনা পরিষ্কারের ব্যবস্থা হয় তারদিকেও বিশেষ নজর দেয়ার কথা বলেন।

riju advt

জেলাশাসক জানান নদীতে যেহেতু প্রচুর জল আছে এবং এখন কোভিডের সময় তাই আমি বিডিওকে বলেছি এখানে মানুষ আসবেন পিকনিক করবেন এটা ঠিক। কিন্তু একসাথে প্রচুর মানুষ যেন না ঢুকে পড়েন সেক্ষেত্রে নজরদারি রাখতে হবে। তাছাড়া অন্যান্য যেসব বিষয় একেবারেই বন্ধ থাকে সেটা থাকবেই। আর নদীর ধারে ধারে নিরাপত্তার জন্য বিশেষভাবে নজর রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যারা নৌকা চালায় তাদেরকেও বলতে হবে ওরা যখন যাত্রী তুলবেন সমস্ত ধরনের নিয়ম মেনে যেন যাত্রী তোলা হয়।

শনিবার আচমকা সালানপুর ব্লকে জেলাশাসক আসেন। তিনি হিন্দুস্তান কেবলস, রুপনারায়নপুর ,সামডি এলাকায় বেশ কয়েকটি নির্বাচনী বুথে সরজমিনে  বি এল ও দের কাছে খোঁজখবর করেন এবং যারা  ভোটার হিসেবে  এসেছেন তাদের সাথে সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথা বলেন।

জেলাশাসক ছাত্রদের সাথে কথা বলেন

এরপর তিনি সামডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচনী বুথ সংলগ্ন স্কুল ময়দানে দেখেন বেশ কয়েকটি ছাত্র ক্রিকেট খেলছে ।এদের মধ্যে যেমন সার্থক  পাল,সুপ্রিয় ঘটক, পিন্টু ধীবর, সুরজিৎ পাল এই সব ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রদেরকে জিজ্ঞেস করেন তোমরা কোন ক্লাসে পড়ো কিভাবে পড়াশোনা চলছে ।ওরা উত্তর দেয়  অনলাইনে তাদের পড়াশোনা হচ্ছে। এদের বাবা কি করেন ।এর উত্তরে  কেউ বলেন বেসরকারি স্থানীয় একটি ছোট কারখানায় কাজ করেন। কারো বাবা গাড়ির চালক, কারো বাবা-মাছ ধরে জীবন নির্বাহ করেন, কারওমা আশা কর্মী।

এরপর তিনি তাদের পড়ার বাইরে গিয়ে সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে কয়েকটি প্রশ্ন করায় ওরা অত্যন্ত ভাল উত্তর দেয়।  তিনি জিজ্ঞেস করেন ফুটবল না খেলে ক্রিকেট খেলছো কেন ।তারা বলেন ফুটবলে কোভিডের জন্য দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। ক্রিকেটে দূরত্ব বজায় রাখা যায়। উনি জিজ্ঞেস করেন মিড ডে মিল ও পঞ্চায়েতের যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে বাড়িতে সেসব পাও কিনা।  সেখান থেকে ইতিবাচক উত্তর আসে। কিন্তু দুয়ারে সরকার নিয়ে ওদের ধারণা এটা কোনো সরকারই মেলা হচ্ছে যেখানে সাধারণ মানুষকে নানান সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে । তবে স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ওদের যে মন খারাপ সেটাও তারা জেলাশাসক কে বলেন।  পরে জেলাশাসক বলেন আসলে এদের মধ্যে দিয়েই আমি এলাকার মানুষ কিভাবে এই সময় বেঁচে আছেন এই সব ছাত্র-ছাত্রীরা কিভাবে সময় কাটাচ্ছে তা  বুঝলাম। এদের উত্তর নিশ্চয়ই আমাকে আকৃষ্ট করেছে।

এখান থেকে তিনি সালানপুর এরিয়ার এক পরিত্যক্ত খোলামুখ খনিতে যান যেখানে শিব শংকর গোষ্ঠী মৎস্য চাষের তারা ব্যবস্থা করেছে সরকারের সহযোগিতায়। তিনি নিজে ওদের সাথে নৌকোয় করে ঘুরে দেখেন। এই সব মৎস্য চাষীরা ওনার কাছে আবেদন করেন এখানে কেজ চাষ করার সুবিধা দেয়া হোক। তাহলে এদের উৎপাদন বাড়বে । জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।