ASANSOLBengali News

“কোথাও তো আগুন লেগেছে’, মন্ত্রীত্ব হারিয়ে সোশাল মিডিয়ায় হতাশা প্রকাশ বাবুল সুপ্রিয়র, আসানসোলে ফাটলো বাজি

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়,/সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : আসানসোল, ৭ জুলাইঃ ২০১৪ সালে প্রথম বার লোকসভা নির্বাচনে জিতে আসানসোল থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকারের প্রতিমন্ত্রী। পরে ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার আবার আসানসোল থেকে দ্বিগুন মার্জিনে জিতে আবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হন। কিন্তু তার দুবছর ঘুরতে না ঘুরতেই ছন্দ পতন। বুধবার সাত বছরের মাথায় বাবুল সুপ্রিয়র মন্ত্রীত্ব হাতছাড়া হল। তিনি দলের নির্দেশে নিজের মন্ত্রক থেকে ইস্তফা দিলেন। আর এতেই একদিকে যেমন বিষাদ ও হতাশ আসানসোলের বিজেপি নেতৃত্ব। তেমনি অন্যদিকে খুশির হাওয়া আসানসোলের শাসক দলের শিবিরে। আসানসোল মহিশীলা কলোনী বটতলা বাজারে দেখা গেল একদল যুবক বাজি ফাটাচ্ছেন ও বাজনা নিয়ে রাস্তায় আনন্দ করছেন ।

মুখে তাদের শ্লোগান হলো মলয় ঘটক জিন্দাবাদ। বাবুল সুপ্রিয় মুর্দাবাদ। ঐসব যুবকদের হাতে কোন পতাকা না থাকলেও একটা জিনিস পরিষ্কার যে তারা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থক। ঐ যুবকদের দাবি, গত সাত বছর ধরে আসানসোলের উন্নয়নের জন্য সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী থেকেও বাবুল সুপ্রিয় কিছুই করেননি। সাংসদের মন্ত্রীত্ব যাওয়ায় একটা কলঙ্কের বোঝা আসানসোলবাসীর মাথা থেকে নামলো। তাই আমরা উল্লাস করছি। তবে বাবুল সুপ্রিয়র মন্ত্রীত্ব যাওয়া নিয়ে জেলা বিজেপির তরফ থেকে তেমন কোনও প্রতিক্রীয়া দেওয়া হয়নি ।


আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির অবশ্য দাবি মন্ত্রী থাকাকালীন বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। তা অনেকে দেখেও দেখতে পারছেন না। সাংসদ হয়েও তিনি সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাবেন।
আসানসোল জেলা বিজেপির কনভেনর শিবরাম বর্মণ বলেন, সাংসদ মন্ত্রী থাকলে ভালো লাগতো। আসানসোলবাসী হিসাবে মন খারাপ লাগছে। অন্যদিকে জেলা সভাপতি তথা দূর্গাপুরের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই কিছু চাননি।


যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা বর্তমান আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, আসানসোলের সাংসদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন আসানসোলের মানুষদের দুটি বড় জিনিষ উপহার দিয়েছেন। প্রথমে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েও রুপনারায়নপুরের হিন্দুস্থান কেবলস কারখানা ও পরে বার্নস্ট্যান্ডার্ডের বার্নপুর ইউনিট বন্ধ করিয়েছেন।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ে ও ইস্তফা দিয়ে প্রকাশ্যেই হতাশা ব্যক্ত করেন বাবুল সুপ্রিয়। বাবুল সোশাল মিডিয়ায় বলেছেন ধোঁয়া উঠলে কোথাও তো আগুন লেগেছে।’


জানা গেছে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথগ্রহণের আগেই বাবুলকে দলের তরফে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইমতো ইস্তফা দিয়েও দেন তিনি। দলের নির্দেশে ইস্তফা দিলেও এই সিদ্ধান্তে যে তিনি খুশি নন, তা বাবুল সুপ্রিয়র ফেসবুক পোস্টেই স্পষ্ট হয়ে গেছে । যেখানে নিজের হতাশা প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি একপ্রকার ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। বাবুল বলেছেন,”ধোঁয়া উঠলে কোথাও তো আগুন লেগেছে। বন্ধু, অনুরাগী ও সংবাদমাধ্যমের কাছে জানাতে চাই, আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। আমি সেটা করেছি। পাশাপাশি আসানসোলের সাংসদকে মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁর গায়ে কোনও রকম দুর্নীতির আঁচড় না লাগায় তিনি যে খুশি সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন। তবে, সেই সঙ্গে হতাশাও গোপন করেননি। তিনি স্পষ্টই বলছেন, মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ পাওয়ায় তাঁর ‘মন খারাপ।’ কিন্তু কিছু করার নেই।

Leave a Reply