দূর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় আবারও দূর্ঘটনা, ঝলসে জখম এক আধিকারিক সহ পাঁচজন , সেফটি নিয়ে প্রশ্ন শ্রমিক সংগঠনের
বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর চরণ মুখার্জী ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে আটটা ত্রিশ। আচমকাই কর্মীদের চিৎকার শুরু। শুনতে পাওয়া যে, কাজ করার সময় ঝলসে গিয়ে জখম হয়েছেন এক আধিকারিক ও চার কর্মী। স্বাভাবিক ভাবেই হইচই পড়ে যায় দূর্গাপুর ইস্পাত কারখানা জুড়ে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় ইস্পাত কারখানার উদ্ধারকারী দল ও দমকল বাহিনী। পাঁচজনকেই উদ্ধার করে তড়িঘড়ি দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে কারখানার হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করা হয় বিধাননগরের একটি বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছান দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা বা ডিএসপির ডিআইসি বা ডাইরেক্টর ইনচার্জ বিজেন্দ্র প্রতাপ সিং, চিপ জেনারেল ম্যানেজিং বিকাশ মানবাটি সহ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা অন্যান্য আধিকারিকরা। চলে আসেন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বরা।
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2023/10/IMG-20230207-WA0151-e1698295248979.webp?resize=768%2C512&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/02/screenshot_20240229_190626_whatsappbusiness5344494712122488433.jpg?resize=500%2C240&ssl=1)
জানা গেছে, অন্যদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস বিভাগে গলিত লোহার সাথে বিভিন্ন সামগ্রী মিশিয়ে কনভার্টারে ইস্পাত তৈরীর কাজ করছিলেন কর্মীরা। তাদের সঙ্গে ছিলেন কারখানার আধিকারিকরাও। সেই কনভার্টার ফুটো হয়ে জল বার হতে থাকে। তখনই গলিত লোহা ছিটকে যায়। গলিত লোহা ছিটকে ঝলসে গিয়ে গুরুতর জখম হন বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার পৃথ্বীরাজ রায়, স্থায়ী কর্মী সোমনাথ, দুজন ট্রেনি বা প্রশিক্ষণরত কর্মী সর্বজিত ঢাঙ্গর ও বিনয় কুমার হরিজন এবং এক অস্থায়ী কর্মী চিত্তরঞ্জন মন্ডল। তাদেরকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। এরপর সেখান থেকে পৃথ্বীরাজ রায়, বিনয় কুমার হরিজন এবং সর্বজিত ঢাঙ্গরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিধাননগরের বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/02/img-20240229-wa024811095089768773360774.jpg?resize=500%2C279&ssl=1)
দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে এসে পৌঁছান রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক সহ স্থানীয় নেতৃত্বরাও৷
তৃনমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত কারখানার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রজত দীক্ষিত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ তোলেন তিনি বলেন, এই কারখানায় শ্রমিকরা সঠিক নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। প্রশিক্ষণরত শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। সেজন্যই ঘটছে এই ধরনের ঘটনা। দ্রুত তদন্তের দাবিও তুলেছেন তারা।
এদিকে, মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও অভিজিৎ ঘটক বলেন, খুবই চিন্তাজনক বিষয়। বারবার কেন দূর্ঘটনা দূর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ঘটছে। কারখানা কতৃপক্ষের তা দেখা উচিত। অভিজিৎবাবু আরো বলেন, কর্মীরা অভিযোগ করেছেন বেশ কিছুদিন ধরে কনভার্টার দিয়ে জল বেরোচ্ছিলো। তা কারখানা কতৃপক্ষকে বলাও হয়েছিলো। কিন্তু কারখানা কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যে কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার চিপ জেনারেল ম্যানেজার বিকাশ মানবাটি বলেন, কারখানায় একটি দুর্ঘটনা হয়েছে। সেই খবর পেয়েই ডিআইসি সহ আমরা সবাই হাসপাতালে পৌঁছাই। ঠিক কি কারণে এই ঘটনা তা জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।