BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

ডিএভি বিদ্যালয়ে অভিনব নির্দেশ

বেঙ্গল মিরর,  দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। কিছুক্ষণ ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মাইকে ঘোষণা বা নির্দেশ এল তোমরা এখন পানিও জল খেয়ে নাও। আর এমন নির্দেশ শুনে ছাত্র-ছাত্রীরা পানীয় জল যে যার বোতল থেকে খুলে খাওয়া শুরু করল। এই অভিনব নির্দেশ কার্যকরী হলো পশ্চিম বর্ধমান জেলায় প্রথম রূপনারায়নপুরের হিন্দুস্থানকেবলা  ডিএভি বিদ্যালয়ে। এখানে প্রায় ১৭৫০ ছাত্রছাত্রী আছে। শুধু একবার নয় ক্লাস চলাকালীন অন্তত প্রয়োজন মোতাবেক এরকম দু থেকে তিনবার খোদ স্কুলের অধ্যক্ষের ঘর থেকেই স্কুলের ক্লাসে ক্লাসেই এই ঘোষণা আজ থেকে পৌঁছে যাবে পুরো দমে। ডিএভি হিন্দুস্তানকেবলসের এই বিদ্যালয়ের এমন উদ্যোগ অধ্যক্ষর ঘর থেকে মাইকে ঘোষণার মধ্যে করার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীক মোঃ ইউনুস খান । গরমের সময়টা যাতে পুরোটাই এমন উদ্যোগ বজায় থাকে সেটাও তাদের দেখতে হবে। তিনি বলেন এখানকার অধ্যক্ষ সঞ্জয় মজুমদারের নেতৃত্বে শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীরা নিজেদের বেতনের অর্থ দিয়ে কয়েকদিন আগেই আমাদের জেলায় ১৫ জন যক্ষা রোগীর কয়েক মাসের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন। এই বিদ্যালয়ের অভিভাবক অপূর্ব মাজি এবং অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় বলেন এই অভিনব ভাবনায় অবশ্যই ছাত্র-ছাত্রীরা উপকৃত হবেন। এখানেই বিনামূল্যেদস্থ ৫৫ জন ছাত্রছাত্রীকে কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশ শেখানো হচ্ছে।


উড়িষ্যার একটি বিদ্যালয় বাচ্চাদের জল খাওয়ানোর জন্য ঘন্টা বাজিয়ে তাদের সচেতন করার কথা সম্প্রতি শোনা গেছে। সাধারণত স্কুলের ক্লাস শুরু টিফিন এবং ছুটির সময় এই ঘন্টা বাজানো হয়। কিন্তু আলাদা করে গরমে জল খাওয়ার জন্য ঘন্টা বাজিয়ে নির্দেশ দেওয়া ভাবনা এখানেই প্রথম ভাবা হয়েছে।


ডিএভি স্কুলের অধ্যক্ষ সঞ্জয় মজুমদার বলেন এই সময় ৪১° তাপমাত্রা চলছে। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই। গরম আরো বাড়তে পারে ।আমাদের যেহেতু লোয়ার কেজি, আপার কেজি ,ওয়ান, টু , থ্রি শিশুরা যথেষ্ট সংখ্যায় পড়াশোনা করে। তাদের সঙ্গে পানীয় জল থাকলেও তারা নিজে থেকে সব সময় জল খায় না। ডিহাইড্রেসন যাতে না হয় সেজন্য শুধু তাদের নয় আমরা আমাদের সমস্ত ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যই আমি আমার ঘর থেকেই মাইকে করে নির্দিষ্ট সময় পরপর একাধিকবার ঘোষণা করবো যাতে ছাত্রছাত্রীরা সঙ্গে থাকা জল খেতে পারে। ধরা যাক তারা বাড়ি থেকে বেরোনোর পর অন্তত দ্বিতীয় ক্লাস যখন তাদের হয়ে যাবে তখন যেন তারা অবশ্যই একটি জল খায়। এছাড়াও আমি আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়ে সোমবার বৈঠক করে বলেছি তারাও এই বিষয় ক্লাসে ক্লাসে নজর রাখবেন। আমাদের স্কুলে ৭টি কুলার আছে যেখান থেকে ঠান্ডা জল পাওয়া যায়। পাশাপাশি ওরা যাতে  পুরোটাই ঠান্ডা জল না খায় তার জন্য যে স্বাভাবিক পানীয় পানীয় জলের ব্যবস্থা আছে দুটো মিলিয়ে খায় সেদিকেও নজর রাখার জন্য আমাদের কর্মীরা থাকবেন। তাহলে ওদের ঠান্ডা গরম লাগবে না।

আসানসোলের বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক এবং ইএসআই হাসপাতালের সুপার অতনু ভদ্র বলেন এটা অত্যন্ত ভালো একটা উদ্যোগ। কিন্তু এর সঙ্গে আমি পরামর্শ দেবো প্রচন্ড গরমকে মাথায় রেখে প্রত্যেকটি বাচ্চা স্কুলের ৭/৮ ঘন্টা বা বাড়ি ফেরা পর্যন্ত হয়তো আরেকটু বেশি সময় থাকায় তাদের অন্তত ১ লিটার জল খাওয়া উচিত ।এই এক লিটারের মধ্যে অন্তত ৪০ শতাংশ আলাদা করে যদি তারা ওআরএস গুলে বাড়ি থেকে আনে তাহলে খুব ভালো। দ্বিতীয়তঃ টাইট বা ফুল শার্ট  না পড়াই ভালো। ক্লাসের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচিত বিশেষ করে যারা প্রাথমিক শ্রেণীতে পড়ে তাদের এই জল খাওয়ার বিষয়টিতে নজর রাখা।

Leave a Reply