ASANSOLLatestWest Bengal

আসানসোল জেলে জেরার পরে গ্রেফতার, সায়গল হোসেনকে হেফাজতে নিতে মরিয়া চেষ্টা ইডির, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চললো নাটক

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও দেব ভট্টাচার্যঃ এই প্রথম আসানসোল জেলে এসে গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে শুক্রবার দীর্ঘ চার ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করলো কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অফিসাররা। এই জেরার পরে শুক্রবার দুপুর একটা দশ মিনিট নাগাদ জেলেই তাকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অফিসাররা। তার জন্য সায়গলকে সিআরপিসি ৪১ নং ধারায় নোটিশও দেয়া হয়। এরপর ইডির অফিসাররা আসানসোল আদালতে পৌঁছান।

ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র আসানসোল জেলা আদালতের বিশেষ ভ্যাকেশান কোর্টের দায়িত্বে থাকা বিচারক রত্না রায়ের ( বিশ্বাস) এজলাসে সায়গল হোসেনকে ” শোন অ্যারেস্টেড” করা হয়েছে বলে জানান। পাশাপাশি তাকে আদালতে হাজির করানোর জন্য ” প্রডাকশন ওয়ারেন্ট ” ও ” ট্রানজিট রিমান্ড” চেয়ে আবেদন করেন ইডির আইনজীবী ।কিন্তু বিচারক সেই আবেদন গ্রহণ করেন নি। এরপর বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ইডির আইনজীবী ও তদন্তকারী অফিসাররা আসানসোল আদালত থেকে বেরিয়ে আবার আসানসোল জেলে আসেন। জেলে ঘন্টা খানেকের মতো থেকে তারা আবার সন্ধ্যা ছটার পরে আসানসোল আদালতে আসেন। জানা গেছে, ইডির তরফে বিচারকের কাছে আবার একই আবেদন করা হয়।


সায়গলের আইনজীবী খুরশিদ আনসারি বলেন, বিচারক ইডির আইনজীবীকে আবেদনে পদ্ধতিগত ত্রুটি ও সময়ের কথা বলেন। বিচারক বলেছেন যে আদালতে এই মামলা আছে সেখানেই আবেদন করতে হবে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের জন্য। পাশাপাশি তাদেরকে আদালতে সময় মতো আসতে বলেন।
ইডির আইনজীবী বলেন, সায়গলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে আমাদের হেফাজতে আছে। কিন্তু বিচারক আমাদের আবেদন গ্রহণ করেননি।


প্রসঙ্গতঃ, এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দিল্লির রাউজার্স কোর্ট ইডি আবেদন করেছিল সায়গলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে। কিন্তু সেখানে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারক। এরপর দূর্গাপুজোর ঠিক আগে ইডির আইনজীবিরা আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। প্রথমে তা দেওয়া না হলেও পরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। সেই অনুমতি পাওয়ায় পরেই শুক্রবার সকাল সোয়া দশটা নাগাদ আসানসোল জেলে দিল্লির তিন আধিকারিক সহ মোট ৬ আধিকারিক এসে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে ছিল ল্যাপটপ ও জেরা ভিডিও রেকর্ডিং করার সরঞ্জাম ।


আসানসোল জেলে প্রায় চার ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। সায়গলের জন্য নির্দিষ্ট ৩৫ টি প্রশ্ন তৈরি করে আনা হয়েছিল। একজন রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল হয়ে কিভাবে এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি তিনি করেছেন? সেই সঙ্গে কিভাবে গরু পাচার চলত? সেই কাজে পুলিশ প্রশাসনকে কিভাবে কাজে লাগাতেন অনুব্রত মণ্ডল? এর সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনেরই বা ভূমিকা কি ছিল? আর কোন কোন প্রভাবশালীদের কাছে সে টাকা পৌঁছাতো? শুধু এই দেশে নয় বিদেশেও এই কারবারের টাকা গেছে কিনা? এইসবই ছিলো প্রশ্ন।


ইডি সূত্রে জানা গেছে, চার ঘন্টার ম্যারাথন জেরায় সায়গল একেবারেই সহযোগিতা করেনি। কোন প্রশ্নেরই উত্তর সঠিকভাবে দেয়নি সে। জেরায় সে অসহযোগিতা করেছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর। এমনকি ইডির আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করারও চেষ্টা করছে সায়গল হোসেন। এরপরই ইডির অফিসাররা তাকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য দুপুর একটা বেজে দশ মিনিট নাগাদ গ্রেফতারি পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করায়। এরপর তারা আসানসোলের জেলা আদালতে পৌঁছান।
ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান সায়গলকে গ্রেফতার করা হয়েছে দুপুর ১ টা দশ মিনিট নাগাদ। এরজন্য তাকে শোন অ্যারেস্টের কথা বলে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ও ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন করি। কিন্তু বিচারক নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়া ও যে আদালতে মামলা চলছে সেখানেই এই আবেদন জমা দিতে হবে বলে জানান। স্বাভাবিকভাবেই তিনি আর কোন কথা শুনতে চাননি ও আবেদন গ্রহণও ক

Leave a Reply