নতুন করে ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব
শিল্প সেমিনারে এসে লগ্নিকারীদের অভাব অভিযোগ শুনলেন মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা, দিলেন আশ্বাস
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( Asansol News In Bengali Today ) বাংলার বিরোধী দলগুলির মধ্যে অন্যতম বিজেপি বর্তমানে বঙ্গের শিল্পের চেহারা নিয়ে সরব হয়েছে। আর সেই সময়ে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম দুই জেলা পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ায় শিল্প ক্ষেত্রে নতুন করে ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিলেন শিল্পপতিরা। শনিবার আসানসোল ক্লাবে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বনিকসভা ফসবেকি বা ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ” শিল্প বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেমিনারের” আয়োজন করেছিলো। সেই সেমিনারে উপস্থিত থাকা রাজ্যের শিল্প মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজার সামনে শিল্পপতিরা দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায় এই বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন। ছিলেন রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটকও।



শিল্প মন্ত্রীকে অবশ্য এদিনের সেমিনারে শিল্পপতি ও লগ্নিকারীদের বিভিন্ন অভাব অভিযোগ থেকে সমস্যার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। মন্ত্রী সব কিছু শুনে তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এই আসানসোল শিল্পাঞ্চলে বন্ধ হয়ে গেছে বেশি কিছু কেন্দ্র সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প। তার মধ্যে অন্যতম হলো আসানসোলের সেনরেলের সাইকেল কারখানা, বার্ণপুরের বার্ণস্ট্যান্ডার্ড ও রুপনারায়নপুর হিন্দুস্তান কেবলস্। অভিযোগ এইসব বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার জমি ও আবাসন দখল হয়ে গেছে। চুরির ঘটনাও ঘটছে। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী মলয় ঘটক সাংবাদিকদের প্রশ্নে উত্তরে বলেন, এইসব কিছুই কেন্দ্র সরকারের। তারাই বন্ধ করেছে। ঐসব জায়গায় রাজ্য সরকার কিছু করতে পারেনা। নতুন করে কিছু করার হলে, তা করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারই। তারা তো কিছু করছে না। তবে এইসব কারখানার জমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে নেওয়ার কোন ভাবনা আপাততঃ রাজ্য সরকারের নেই বলে মলয় ঘটক এদিন পরিষ্কার জানিয়ে দেন।
এদিন একবারে শুরুতে প্রদীপ জ্বালিয়ে সেমিনারের উদ্বোধন করেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। ছিলেন ফসবেকির সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ রায়, সভাপতি আরপি খৈতান, চেয়ারম্যান সুভাষ আগরওয়াল, পরামর্শদাতা স্বপন চৌধুরী, আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ অরুণাংশু গাঙ্গুলি, বিমল পাটোয়ারি সহ অন্যান্যরা।
শিল্প মন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাখির চোখ হলো শিল্প। মুখ্যমন্ত্রীর স্লোগান হলো, হবে শিল্প, বাড়বে কর্মসংস্থান। তিনি সরাসরি শিল্পপতির কথা শোনেন। তাদের সমস্যার কথা ভেবে তিনি সিঙ্গেল উইনডো সিস্টেমের উপর জোর দিয়েছেন। গত ১১ বছরে সারা দেশের মধ্যে এই বাংলা শিল্প ক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে অন্যসব রাজ্যের বিচারে। তিনি বলেন, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরপর তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হলেন। এর থেকেই বোঝা যায় যে, বাংলায় রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা আছে। এটাই তো বিনিয়োগকারীরা চান।
শিল্প মন্ত্রী এদিন বলেন, শিল্প ক্ষেত্রে কোন দাদাগিরি চলবে না। আমরা খুব সিরিয়াস। আমরা এও মনে করি, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোন রাজনীতি হওয়া উচিত নয়। শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে তার বার্তা, আপনারা এখানকার ভূমিপুত্র। আপনার প্রস্তাব রাখুন। রাজ্য সরকার সব কিছু গুরুত্ব দিয়ে ভাববে ও দেখবে।