আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে টিএমসিপির ব্যানারে রক্তদান শিবির আয়োজন ঘিরে গন্ডগোল, পড়ুয়াদের মধ্যে মারামারি

বেঙ্গল মিরর,আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপির ব্যানারে রক্তদান শিবিরের আয়োজন। আর তা নিয়ে বৃহস্পতিবার গন্ডগোল হলো আসানসোলের ২ নং জাতীয় সড়কের জুবিলি মোড় সংলগ্ন আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। যা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কলেজ চত্বরে। মারপিট হয় দুদল ছাত্রদের মধ্যে। তারমধ্যে একটি দল কলেজের হোস্টেলে থাকে বলে জানা গেছে। কলেজের মুল গেট আটকে দিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়ও বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কলেজের প্রাক্তন ছাত্র সংগঠনের কনভেনার অভিক ব্রম্ভ আহত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজ কতৃপক্ষকে ডেকে আনতে হয় আসানসোল উত্তর থানার পুলিশকে। তবে বড় কোন ঘটনা ঘটার আগেই পুলিশ ছাত্রদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


সাধারণতঃ আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মতো যেসব কলেজ আছে সেখানে কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে সংগঠন করার অনুমতি দেওয়া হয়না। সেই কারণে আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশন আছে। কিন্তু এই এ্যাসোসিয়েশনের বকলমে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি রয়েছে। এ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে টিএমসিপির লোগোও আছে।

riju advt


এই এ্যাসোসিয়েশন গত ১৮ মার্চ শনিবার কলেজের ভেতরে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালে উদ্যোক্তাদের তরফে কয়েকজন কলেজের প্রিন্সিপাল ডঃ পিপি ভট্টাচার্যের কাছে তার অনুমতি নিতে আসে। কিন্তু প্রিন্সিপাল তাদেরকে পরিষ্কার করে বলে দেন কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে কোন কিছু করার অনুমতি কলেজ কতৃপক্ষ দিতে পারেনা। আর শনিবার কলেজে আগে থেকেই নির্দিষ্ট একটি অনুষ্ঠান আছে। তাই তাদেরকে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
এরপরই কলেজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ হোস্টেলে থাকা কয়েকজন ছাত্র রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছে তাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের মধ্যে মারামারিও হয়। তাতে প্রাক্তন ছাত্র ছাত্র সংগঠনের কনভেনার অভিক ব্রম্ভ আহত হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে এক ছাত্র কলেজের প্রিন্সিপাল ও অন্য অধ্যাপকদের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। কলেজের গেট আটকে দেওয়া হয়। ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদেরকে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ কলেজে আসে। সেই পুলিশকে ঘিরেও ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখায়।


এই প্রসঙ্গে অভিক ব্রম্ভ বলেন, ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের স্বার্থে টিএমসিপির ছাতার তলায় গেছে। কলেজে রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন করা যায় না, তা আমরা জানি। কিন্তু ছাত্র ছাত্রীদের অনেক সমস্যা ও দাবি আছে, যা তারা বলতে পারে না। তখন এই সংগঠন দরকার হয়। অভিক আরো বলেন, আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আগামী ১৮ মার্চে একটি রক্তদান শিবির করার অনুমতি চাইতে গেছিলাম প্রিন্সিপালের কাছে। তিনি আমাদেরকে বলেন, ঐ দিন কলেজর কর্মসূচি আছে। তাই অনুমতি দেওয়া যাবে না। এই ছাত্র নেতার দাবি, রক্তদান শিবিরের আয়োজনের সঙ্গে কলেজে ছাত্রদের মধ্যে গন্ডগোলের কোন সম্পর্ক নেই। দুই ছাত্রের পুরনো কোন ঝামেলা থেকে একটা সমস্যা হয়। তা থামাতে গিয়ে আমার আঘাত লাগে। সে আরো বলে, কলেজ কতৃপক্ষ ভেতরে অনুমতি না দিলেও, শনিবার কলেজের বাইরে রক্তদান শিবির করা হবে।


অন্যদিকে, কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে কোন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়না। আর শনিবার কলেজের অনুষ্ঠান আছে। তিনি আরো বলেন, এরপরেই কলেজে একটা গন্ডগোল হয়। গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। পড়ুয়াদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তবে বড় কোন ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ এসেছিলো। প্রসঙ্গতঃ, এই প্রথম আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশনকে সামনে রেখে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *