আসানসোলে দলের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মেয়র, সরকারি কাজে বাধা, করা হবে মামলা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* আসানসোল পুরনিগমের তৈরি কমিউনিটি হল জোর করে দখলে রাখা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়া নিয়ে দলেরই কাউন্সিলার সিকে রেশমার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মেয়র বিধান উপাধ্যায়। মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে মেয়র সরাসরি বলেন, ঐ কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে এই কাজের কেস করা হবে। স্বাভাবিক ভাবেই এদিনের মেয়রের এই বক্তব্যের পরে আসানসোল এই কমিউনিটি হল নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।













প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল পুরনিগমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগর এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারের হস্তান্তর করা নিয়ে সোমবার তৃণমূল কাউন্সিলর সি কে রেশমা ও আসানসোল পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ার এবং লিগ্যাল এ্যাডভাইজারের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। আসানসোল পুরনিগমের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আর কে শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে যায়। কয়েক ছয়েক আগে হওয়া টেন্ডারের মাধ্যমে পাওয়া ঐ কমিউনিটি হল পাওয়া এমবি এন্টারপ্রাইজেসকে স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সি কে রেশমা আসানসোল পুরনিগমের টিমকে বাধা দেন। যার ফলে তাদেরকে খালি হাতে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়। সি কে রেশমার দাবি ছিলো যে, এখানে গরীব মানুষদের একটি কেন্দ্রটি এই কমিউনিটি সেন্টারে চালানো হয়। এলাকার দরিদ্র লোকেরা তাদের গৃহস্থালির কাজের জন্য এটি ভাড়া নিয়ে থাকেন। তবে, যদি এখন এই হলটি কোন কোম্পানিকে দেওয়া হয়, তাহলে দরিদ্র মানুষের পক্ষে এটি ভাড়া নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
এর পাশাপাশি সি কে রেশমা এমবি এন্টারপ্রাইজেসের বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছিলেন।এদিন এই ইস্যুতে মেয়র বিধান উপাধ্যায় কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিতে বলেন, আসানসোল পুরনিগমের নির্মিত কোনও সম্পত্তি কারোর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সবকিছু পুরনিগমের সম্পত্তি। এটা সরকারি টাকায় তৈরি। তাই যদি কোনও কোম্পানি টেন্ডারের মাধ্যমে কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে থাকে, তাহলে তাতে বাধা দেওয়ার অধিকার কারোর নেই। তৃণমূল কাউন্সিলর কেন আসানসোল পুরনিগমের টিমকে বাধা দিয়েছেন? এর উত্তরে বিধান উপাধ্যায় বলেন, দলের ঐ কাউন্সিলরের উদ্দেশ্য ছিল ঐ কমিউনিটি হল দখলে রেখে থেকে বেশি অর্থ উপার্জন করা। আর আসানসোল পুরনিগমকে কম টাকা দেওয়া। টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে কাউন্সিলারের প্রশ্ন তোলা নিয়ে, মেয়র বিধান উপাধ্যায় সিকে রেশমার প্রতি প্রশ্ন তুলে বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি যদি টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন তুলতে চান, তাহলে প্রথমে তাকে উত্তর দিতে হবে যে তিনিও কমিউনিটি সেন্টারের টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিভাবে সেই টেন্ডারে তার নাম দ্বিতীয় স্থানে আসে? কিভাবে ঘাঘর বুড়ি মন্দিরের কাছে আরেকটি কমিউনিটি সেন্টারের টেন্ডার সিকে রেশমার নামে দেওয়া হয়েছে? অতএব, টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা ভুল। তিনি সরাসরি বলেন, সিকে রেশমা চাইছেন, যতটা সম্ভব কম টাকা আসানসোল পুরনিগম দেওয়া। সেইজন্য এটা তার একটা প্রচেষ্টা। এই টেন্ডারের মাধ্যমে যদি পুরনিগম বেশি টাকা পায়, তাহলে পুরনিগম স্বচ্ছভাবে একই কাজ করবে। তিনি বলেন, আগে আসানসোল পুরনিগম ঐ কমিউনিটি সেন্টার থেকে ১ লক্ষ টাকার কিছু বেশি পাচ্ছিল। কিন্তু এখন সেখান থেকে বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকারও বেশি পাওয়া যাবে। এমন পরিস্থিতিতে পুর কতৃপক্ষ কেবলমাত্র সেই কাজই করবে যা পুরনিগমের জন্য উপকারী। মেয়র বিধান উপাধ্যায় স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, সোমবার সিকে রেশমা আসানসোল পুরনিগমের আধিকারিকদের কাজ করতে বাধা দিয়েছেন। এর জন্য সিকে রেশমার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে মামলা করা হবে। তার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

