ASANSOL

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন স্বত্তা নেই, রাজ্য সরকারের কথায় চলে, সমালোচনা করে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৪ নভেম্বরঃ রাজ্য নির্বাচন কমিশন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি যাওয়া ও শাসক দলের নেতা খুনের ঘটনায় একযোগে তৃনমুল কংগ্রেসকে একযোগে সমালোচনার সুরে কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে নতুন করে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক শুরু হয়েছে।


বুধবার সকালে আসানসোলের বার্নপুর বাসস্ট্যান্ডে এক চা চক্রে যোগ দিতে এসে দিলীর ঘোষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, জলপাইগুড়িতে তৃণমূল নেতা খুনে রাজ্য পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নয় শাসক দলের কর্মীরা, খোদ তারাই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে। এটা তো বিজেপি অনেক আগে থেকেই বলে আসছে। তিনি আরো বলেন, দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে রাজ্যের সমস্ত জেলাতেই রাজনৈতিক খুন হচ্ছে। তৃনমুল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলে খুন হচ্ছে। নিজের পিঠ বাঁচানোর জন্য শাসক দলের নেতারা উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। হাওড়া, জলপাইগুড়ি, ক্যানিং, মুর্শিদাবাদ সর্বত্র একই ঘটনা রোজ হচ্ছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার ওপর কারোর ভরসা নেই। পুলিশের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে। আমরা বলতাম সিবিআই তদন্ত হোক। এখন তৃনমুল কংগ্রেসের কর্মীরাই একই আওয়াজ তুলছেন।

অর্থ্যাৎ নিজেদের সরকার ও নিজেদের লোকের উপর তাদেরই ভরসা নেই। এমনকি আদালত এখানে পুলিশকেও ভরসা করেনা। বলতে গেলে একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। কটাক্ষ করে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বলেন, আর মুখ্যমন্ত্রী ভিক্ষা চাইতে দিল্লি গেছেন। কেউ গেছে ত্রিপুরাতে। কেউ আবার গোয়াতে। পশ্চিমবাংলার মানুষের কি হবে? যারা এই বাংলাকে গোয়া বানাতে চেয়েছিলেন তারা গোয়াকে এখন বাংলা বানাচ্ছেন। আর এই দুর্ব্যবস্থা। রোজ খুন হচ্ছে। আমার মনে হয় ধীরে ধীরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু।
পুর ভোটের প্রচারে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরায় বলেছেন ভোট দিতে পারলে সেখানে পরিবর্তন হবে। এর উত্তরে ভোট দিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, সেখানে কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি। পশ্চিমবাংলার বাইরে কোথাও ভোটে বাধা দেওয়া হয় না। ৫ রাজ্যে বিধানসভা হয়েছে। পশ্চিম বাংলাতেও হয়েছে। তখন খুব একটা বাধা দেওয়া যায়নি। কিন্তু উপনির্বাচনে কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। এই রাজ্যে ভোটে হিংসা ও খুন হয়েছে। বাকি রাজ্যে ভোটে একটাও ঢিলও পড়েনি। কোনও মারপিট হয়নি। কেন পশ্চিমবাংলায় হয় ? এই হিংসার সংস্কৃতিকে এখন অন্য রাজ্য নিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল।


বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি তুলে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দারস্থ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দিল্লি কেন গেছেন? প্রস্তাব তো বিধান সভায় পাশ হয়ে গেছে। যারা সেনাকে বিশ্বাস করে না। বিএসএফ, সিআইএসএফ, আরপিএফকে বিশ্বাস করে না। মনে হয় তাদের দেশের সংবিধানের ওপর বিশ্বাস নেই।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন স্বত্তা নিয়ে রাজ্যপালের প্রশ্ন নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, এই প্রশ্ন আমাদেরও আছে। যদি নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন স্বত্বা থাকে তবে তিন বছর ধরে রাজ্য ১২০ পুরসভার ভোট বাকি থাকতো না। কমিশনের দায়িত্ব সময়ে নির্বাচন করানো। তা নেই বলেই তো সময় মতো ভোট করানো হয়নি। কমিশন রাজ্য সরকারের কথায় চলে।তারা সেটা করেননি বলেই স্বাধীন স্বত্বা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ঠিক প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কি করে দুটো মাত্র পুরসভায় ভোট করানো হচ্ছে? ১১৮ টার বাকি থাকবে কেন। সেগুলো হওয়া উচিত। সেই প্রশ্ন আমরা করেছি।


হাওড়া ও বালি পুরসভা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের নতুন সংঘাত তৈরি হওয়া নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, এটা সাধারণ মানুষেরও প্রশ্ন। আপনারা বালি পুরসভাকে কেন হাওড়া কর্পোরেশনে মিলিয়ে দিয়েছিলেন? তখন হয়তো জেতার দরকার ছিল। এখন দেখছেন বালি থাকলে হাওড়া জিততে পারবেন না। তাই দুটিকে আলাদা করা হচ্ছে। চিন্তাভাবনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কার স্বার্থে তখন হয়েছিলো। কেবল মাত্র রাজনীতিক স্বার্থে। তাহলে আগের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এবার হয়তো বলবেন আগেরটা ভুল ছিল এবারেরটা ঠিক। আবার এক করে দাও। এই খামখেয়ালিপনা নিয়ে কোন সরকার চলতে পারে না।


ত্রিপুরা পুর নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রীম কোর্টে যাওয়া নিয়েও এদিন কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, সুপ্রীম কোর্টে কেন, কেউ চাইলে ইউএনএতে যাবেন। ত্রিপুরায় নির্বাচন লড়তে গেলে আগে তো প্রার্থী দিতে হবে। তৃনমুল কংগ্রেসের কাছে কোন প্রার্থী নেই। প্রার্থী না দিয়ে প্রচার করা মানে কি রকম আহাম্মকের কাজ এটা।

Leave a Reply