আসানসোলে প্রায় দু’বছর পর হস্তশিল্প মেলা, জেলা গ্রন্থাগার ময়দানে উদ্বোধন
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও দীপ সেন, আসানসোল: করনার কারণে প্রায় দু’বছর পর এই প্রথম আসানসোলে হস্তশিল্প মেলার আয়োজন করল হ্যান্ডিক্রাফট কমিশনারের দপ্তর ।শুক্রবার জেলা গ্রন্থাগার ময়দানে এই হস্তশিল্প মেলা প্রদীপ জ্বালিয়ে ওই মেলার উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন বস্ত্র মন্ত্রকের বর্ধমান হান্ডিক্রাফটস সার্ভিস সেন্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর (হান্ডিক্রাফটস) মৌসুমী গুহ উকিল, কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের হান্ডিক্রাফটস বর্ধমান সেন্টারের পক্ষ থেকে পীযুষ সিংহ, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শঙ্খ শিল্পী বাবলু নন্দী, রাজ্য স্তরের পুরস্কারপ্রাপ্ত পটচিত্রশিল্পী ভাটু চিত্রকর, বিখ্যাত কাঁথা শিল্পী ও এগ্রা এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট সোসাইটির সহ সম্পাদক মধুসূদন বিশ্বাস, সোসাইটির প্রধান কমলাকান্ত জানা, প্রাক্তন কাউন্সিলর ববিতা দাস প্রমুখ।
প্রবীণ ভাটু চিত্রকর বলেন পটশিল্পের চাহিদা দিনে দিনে কমছে যে শুধু তাই নয় সারাদেশের কমছে। তবে দামি শাড়ির মধ্যে কৃষ্ণ চৈতন্য ,মনসা মঙ্গল, বেহুলা লক্ষিন্দরের নানান ছবি কাহিনী তিনি রং দিয়ে এই মেলাতে বসে বসে আঁকছেন বিক্রির জন্য। তিনি বলেন আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতে একটি নিজস্ব ছোট ঘর পেয়েছি পশ্চিম মেদিনীপুরে ।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের হাট গ্রামের শঙ্খ শিল্পী বাবলু নন্দী বলেন দিনে দিনে আমাদের চাহিদা এই শিল্পে বাড়ছে। এমনকি এতদিন ধরে শঙ্খের যে অংশটুকু ফেলে দিতাম সেগুলো দিয়ে ধূপদানি, পেপার ওয়েট সহ নানান সুন্দর জিনিস এখন বা বানিয়ে বিক্রি হচ্ছে। এখানে প্রথমদিনই আমার ১৪ হাজার টাকায় কাজ করা দুটি বড় শঙ্খ বিক্রি হল । এছাড়াও আরও শাখের কিছু জিনিস বিক্রি হয়েছে।
বর্ধমানের আউসগ্রাম এর শুভাস মহালি বাঁশের অংশ দিয়ে ফুলদানি থেকে শুরু করে নানান কারুকার্য করা জিনিস তৈরি করে বিক্রি করছেন মেলায়। সুভাস বলেন আউসগ্রাম এর মহালি পাড়ায় ১০০ টি পরিবার এতদিন ওখানে কুল, ঝুড়ি তৈরি করে বিক্রি করতো। কিন্তু আমরা কুড়ি জন এমন প্রশিক্ষণ নিয়ে এই কাজ শিখে আজ প্রথম গ্রাম থেকে বেরিয়ে এই মেলাতে এলাম। আসা-যাওয়ার খরচ এবং এখানকার খরচ ওনারাই দিয়েছেন।
দুর্গাপুরের অরবিন্দ পল্লির মিতালী দাস বললেন আমরা কুড়ি জন মিলে গোষ্ঠী করে বিভিন্ন ধরনের স্টিচ কাপড়ের উপরে তৈরি করে তা যেমন বিক্রি করি ,তেমনি মহিলাদের জন্য নানান ধরনের গহনা তৈরি করে বিক্রি করি এই ধরনের মেলায়। আগামী দোসরা জানুয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলবে।