ASANSOL

চুরি করার পর ভার্চুয়াল ফোন থেকে মেসেজ পাঠিয়ে খোদ হুমকি চোরের

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল ।চুরি করার পর ভার্চুয়াল ফোন থেকে মেসেজ পাঠিয়ে খোদ হুমকি চোরের। এমনকি মেসেজের চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে কোনোভাবেই তার ফোন নম্বর ট্র্যাক করা যাবে না । আর চোরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসানসোল মহকুমায় প্রথম বলে মনে করা হচ্ছে । এই অভিযোগ পাওয়ার পর হিরাপুর থানার পুলিশের ঘুম প্রায় চলে গিয়েছে। বাজারে মোবাইল পরিষেবা আসার পর এই প্রথম ভার্চুয়াল ফোন থেকে এমন মেসেজে চোরেরা চুরি হুমকির অভিযোগ পাঠিয়ে আসানসোল পুলিশকে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।


জানা গেছে হিরাপুর থানার সূর্যনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে পরিবহন ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্তা, তার পরিবার নিয়ে থাকেন। তিনি জানান গত ২৪ শে জানুয়ারি ঘন্টা দুয়েকের জন্য পরিবারের লোকেরা এক আত্মীয়র কাছেই বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন দুপুর বারোটা নাগাদ । দুপুর দুটো নাগাদ রাজেশ বাবুর বাবা প্রথম বাড়িতে আসেন এবং ফিরে দেখেন তিনটি ঘরের মধ্যে ঢোকার জন্য পিছনের দরজাটা ভাঙা। সেখানে দিয়ে চোরেরা একটি ঘরে ঢুকে আলমারি থেকে আট হাজার টাকা নগদ এবং প্রায় ছয় লক্ষ টাকা মূল্যের গহনা নিয়ে পালিয়ে গেছে। পালানোর সময় চোরেদের হাত থেকে দু-একটা রুপোর গহনা সেখানে পড়ে যায় যা বাড়ির লোকেরা পরে উদ্ধার করে।


চুরির দিনই রাতে নটা তিন মিনিট থেকে নটা ছয় মিনিটের মধ্যে পাঁচটি মেসেজ ভার্চুয়াল ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে লিখে শ্রী গুপ্তকে পাঠানো হয়। তাতে লেখা হয় বেশ মজা পেলাম। কত টাকা গেল ইত্যাদি । আবার শুক্রবার রাত্রি ৭টা ৪ মিনিট থেকে ৭টা ৯ মিনিট পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মেসেজ পাঠানো হয়। প্রথম মেসেজেই বলা হলো মজা আসলো চুরিটা করে। সাতটা পাঁচে দ্বিতীয় মেসেজে বলা হলো ভালই মাল পেয়েছি।ছয় লাখ টাকার। আরেকটি ম্যাসেজে লেখা তুই নম্বরটা ট্রাক করতে পারবি না ।তারপরের মেসেজ লেখা হল আমি তোর পুরো অটোবায়োগ্রাফি জানি।
শনিবার লিখিতভাবে এই অভিযোগ পাওয়ার পর হিরাপুর থানার ওসি প্রসেনজিৎ রায় নিজে ঘটনাস্থলে যান এবং তদন্ত শুরু করেছেন। কেননা এটা শুধু বাড়ির মালিক নয় খোদ পুলিশ কেও চোর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এই ধরনের মেসেজের মধ্যে দিয়ে।


কি এই ভার্চুয়াল ফোন এই বিষয়ে পুলিশের এক আধিকারিক জানান একটি বিশেষ ধরনের অ্যাপস লোড করে তার মধ্যে দিয়ে মেসেজ পাঠানো হয় এবং সেই মেসেজ কোন নাম্বার থেকে আসছে তা ধরা সাধারণত যায় না। এক্ষেত্রে পুলিশ আসানসোলের সাইবার আধিকারিকদেরও ও হোয়াটসএপ কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে চিঠি দিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। পুলিশ শনি ও রোববার বাড়ির বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেছেন। পুলিশের ধারণা যে পরিবারের চুরি হয়েছে তাদের পরিচিত এবং কাছাকাছি কোনও বাসিন্দা এই ধরনের অপরাধ করতে পারে। তবে ওই আধিকারিক বলেন অতীতে কখনো এমন চোরেরা ভার্চুয়াল ফোন ব্যবহার করে এমন ধরনের মেসেজ দেওয়া বা চ্যালেঞ্জ করেছে তার কোন ঘটনা জানা নেই।

Leave a Reply