বিহারের আদালতে গুলি চালানোর ঘটনা, বরাকরের ধর্মশালা থেকে গ্রেফতার তিন দূষ্কৃতি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ এক সপ্তাহ আগে বিহারের গয়া জেলার শেরঘাটি আদালতে গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার বরাকরে লুকিয়ে ছিলো। বুধবার রাতে কুলটি থানার বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে গ্রেফতার করে। ধৃত তিনজনই বিহারের বক্সারের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ধৃতদেরকে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে চারদিন পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
এক সপ্তাহ আগে গয়ার শেরঘাটি আদালতে যে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছিলো তার তদন্তে নেমে পুলিশ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট ক্লু পেয়েছে বলে জানা গেছে। গত ২৪ জুলাই আরএলজেপি নেতা আনোয়ার আলি খান হত্যার প্রধান অভিযুক্ত ফোতু খানকে নিয়ে এক কনস্টেবল আদালত থেকে বেরোচ্ছিলো। সেই সময় গুলি চালানো হয়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে পুলিশ শনাক্ত করেছে। এই দুষ্কৃতীদের মধ্যে তিনজন বিহারের বক্সারের বাসিন্দা ও দুজন স্থানীয় বলে পুলিশ জানতে পারে। ঐ দুজনকে ইতিমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । বাকি তিনজনের খোঁজে তৎপর ছিল বিহার পুলিশ। তাদের সম্পর্কে তথ্য দিলে বিহার পুলিশের তরফে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিলো ।
শেরঘাটি আদালতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুলিশ যে তিনজনকে খুঁজছিল তাদের মধ্যে রয়েছে শিরাজ সিদ্দিকী ওরফে পলি (সারিমপুর, থানা শিল্প এলাকা, বক্সার), মেহেদি হাসান (সিকরাউল, বক্সার), ইদানী খান ওরফে তকির খান (সারিমপুর, থানা শিল্প এলাকা, বক্সার)। গয়া পুলিশ তাদের পরিচয় গোপন রেখে তাদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করেছিলো । এসব বিষয়ে তথ্য দিতে তিনটি ফোন নম্বর জারি করা হয়েছিলো।
বুধবার সন্ধ্যায় বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, জনাতিনেক বহিরাগত দূষ্কৃতি বরাকরের এক ধর্মশালায় মঙ্গলবার থেকে লুকিয়ে আছে। সেই মতো বুধবার রাতে বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ ঐ ধর্মশালায় অভিযান চালিয়ে তিনজকে ধরে ফেলে। প্রাথমিক জেরায় পুলিশ জানতে পারে, এই তিনজন বিহারের আদালতে গুলি চালানোর ঘটনায় মুল অভিযুক্ত। গোটা বিষয়টি বিহার পুলিশকে ইতিমধ্যেই আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে।
বিহার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই আরএলজেপি নেতা আনোয়ার আলি খান হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে আসা প্রধান অভিযুক্ত ফোতু খানকে হত্যা করার জন্য বাইরে থেকে দূষ্কৃতিদের জড়ো করা হয়েছিল। পুলিশ আসামি ফতু খানকে হাজির করায়। তারপর তাকে থানার দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের উপরে দূষ্কৃতিরা নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। তাতে ফতু খান ও তার সঙ্গে থাকা কনস্টেবল গুলিবিদ্ধ হন। তাদের হাতে গুলি লাগে। এ ঘটনায় কাকতালীয়ভাবে পুলিশের পাল্টা ধাওয়ায় দুজন ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে একজন নাবালক ছিল বলে বিহার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তারপর থেকে পুলিশ পালিয়ে যাওয়া তিনজনকে খুঁজছিলো।