কলকাতায় গেলেন না জিতেন্দ্র, ১৮ ডিসেম্বর দেখা করতে মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে
সকাল থেকে ব্যস্ত থাকলেন আসানসোল পুরনিগমের অনুষ্ঠান ও বৈঠকে
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৫ ডিসেম্বরঃ শেষ পর্যন্ত আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তেওয়ারি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করতে মঙ্গলবার কলকাতায় গেলেন না। জিতেন্দ্র তেওয়ারি এই প্রসঙ্গে এদিন সংবাদ মাধ্যমকে কোন কিছু বলেননি। তিনি এদিন সকাল থেকে ব্যস্ত ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বৈঠক নিয়ে।
রবিবার রাতে রাজ্যের পুর মন্ত্রীকে দেওয়া একটি চিঠি সোমবার সকালে প্রকাশ্যে আসতেই সরগরম হয়ে উঠে রাজ্য রাজনীতি। যা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় জিতেন্দ্র তেওয়ারির ও ফিরহাদ হাকিমের মধ্যে বাকযুদ্ধ চরমে উঠেছিলো। দু’জনেই একে অপরকে নানা কথার মাধ্যমে আক্রমণ করতে ছাড়েননি। সোমবার বিকেলের পরে জানা যায়, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছটার সময় বৈঠকে ডেকেছেন। মন্ত্রী নাকি জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে ফোনও করেছিলেন। পরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি নিজে সেই বৈঠকের কথা স্বীকারও করেছিলেন। তবে তিনি যাবেন কি, যাবেন না তা খোলসা করেননি।
জিতেন্দ্র তেওয়ারি যাবেন কিনা তা নিয়ে আসানসোল জুড়ে সরগরম ছিলো
তাই মঙ্গলবার সকাল থেকে সেই বৈঠকে যোগ দিতে জিতেন্দ্র তেওয়ারি যাবেন কিনা তা নিয়ে আসানসোল জুড়ে সরগরম ছিলো। তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী থেকে আসানসোলের সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ ছিলো এই ভেবে যে জিতেন্দ্র তেওয়ারি কি করবেন ও কখন তিনি কলকাতা যাবেন। কিন্তু বেলা বারোটা পর্যন্ত জানা যায়নি জিতেন্দ্র তেওয়ারি সন্ধ্যার বৈঠকে যাবেন কিনা।
তিনি নিজেও সকাল থেকে সেই বৈঠকে যাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা করে রেখেছিলেন। এদিন তিনি সকাল এগারোটা থেকে আসানসোল পুরনিগমের রেলপার এলাকায় পরপর তিনটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। যার মধ্যে ছিলো একটা স্কুলের উদ্বোধন। দুটি আলাদা আলাদা এলাকায় লাইব্রেরি ও মন্দ উদ্বোধন। সবমিলিয়ে সেই তিনটি অনুষ্ঠানে জিতেন্দ্র তেওয়ারির ঘন্টা দেড়েকের মতো ছিলেন।
পরে তিনি আসানসোল পুরনিগমে আসেন। সেখানে তিনি বেলা তিনটে পর্যন্ত ছিলেন। তখনই মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে, জিতেন্দ্র তেওয়ারি পুর মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে আর কলকাতা যাচ্ছেন না। এরপর তিনি আসানসোলের উষাগ্রামের অগ্নি কন্যা ভবনে ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃনমুল কংগ্রেসের হিন্দি প্রকোষ্ঠ পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এদিন তার সেই রকমভাবে আর কোন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছিলোনা।
আগামী ১৮ ডিসেম্বর জিতেন্দ্র তেওয়ারি কলকাতা যাবেন
এরমধ্যেই জানা যায়, সোমবার রাতে সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ও মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস জিতেন্দ্র তেওয়ারির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তার থেকেই জানা, এরপরই এদিনের বৈঠকে না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এও জানা গেছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বর জিতেন্দ্র তেওয়ারি কলকাতা যাবেন। সেদিন তার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা। দুজনের মধ্যে এই চিঠি দেওয়া নিয়ে বৈঠকও হতে পারে। জিতেন্দ্র তেওয়ারি নিজেও এদিন এই নিয়ে বিশেষ কিছু জানাতে চাননি। তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমকে কিছু বলবো না। যা করার দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে করবো।
প্রসঙ্গতঃ, সোমবার জিতেন্দ্র তেওয়ারি পরিষ্কার করে বলেছিলেন তিনি শুধু মমতা বন্দোপাধ্যায়কে চেনেন। আর কাউকে না। প্রসঙ্গতঃ, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক হিসাবে জিতেন্দ্র তেওয়ারি লিখেছিলেন যে, আসানসোল পুরনিগম দুটি বড় প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারে নি। তার অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক। এর পাশাপাশি মন্ত্রীর দপ্তর তার অনুমোদন দেয়নি। একইসঙ্গে, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর আসানসোল পুরনিগম এলাকায় বেশকিছু কাজেরও অনুমোদন দেয়নি।