RANIGANJ-JAMURIA

রানীগঞ্জের গান্ধী স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী অঞ্জলি বর্মন এবার অনবদ্য অ্যাপ তৈরি করে, করল বাজিমাত

ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যে অবস্থিত বিশ্বের তৃতীয় নম্বর ইউনিভার্সিটি স্ট্যান্ড ফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে উচ্চতর বিদ্যার্জনের সুযোগ

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : রানীগঞ্জের বাংলা মাধ্যমের সরকারি স্কুল, গান্ধী স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন করা ছাত্রী অঞ্জলি বর্মন এবার অনবদ্য অ্যাপ তৈরি করে,করল বাজিমাত। সে এবার পেল আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যে অবস্থিত বিশ্বের তৃতীয় নম্বর ইউনিভার্সিটি স্ট্যান্ড ফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে উচ্চতর বিদ্যার্জনের সুযোগ। বিশ্বের আটজন পড়ুয়ার মধ্যে এই প্রথম ভারতীয় মহিলা, উদ্যোগপতি অঞ্জলি বর্মন এবার এক্সিকিউটিভ এডুকেশনের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া স্ট্যান্ডফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে।

মূলত সে এমা চ্যাট নামের একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করে, বিপুল সংখ্যক মানুষজনের, বিশেষ করে বিশ্বের উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ব্রাজিল সহ কয়েকটি দেশের মানুষজনের বিভিন্ন উপযোগিতার ক্ষেত্রে এই অ্যাপ ব্যবহার করে সুনাম অর্জন করার বিষয়, লক্ষ্য করেই এবার বিশ্বের অন্যতম ইউনিভার্সিটি স্ট্যান্ড ফোর্ড ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ তাকে তিন বছর ধরে এক্সিকিউটিভ এডুকেশন, বিষয় নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ করে দিল। জানা গেছে তিন বছরের এই পঠন-পাঠনের জন্য তার প্রায় তিন কোটি টাকার মত খরচ হবে, যার সম্পূর্ণটাই বহন করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।


ছাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে জানা যায় রানীগঞ্জের গান্ধী মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করা ওই ছাত্রী একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময়ই অস্থি সমস্যা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে, আর সেই সময় সে বাড়িতে থেকেই নিজের চিরাচরিত পঠন-পাঠনের সাথেই পড়তে থাকে বিভিন্ন উদ্যোগপতি যেমন জ্যাকমা, রবার্ট কিওসাকি , ভারতে অল্প সময়ে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করা ভারতীয় রিতেশ আগারওয়াল ও তার সাথেই মার্ক জুহেনবার্গ সহ বিভিন্ন উদ্যোগপতির জীবন বৃত্তান্ত। যেখানে সে খুঁজে পায় নিজের লাইফ স্টাইল বা জীবনে চলার অন্য এক গতিপথ। সেই দিশাতেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা-ভাবনা করে, সে এই চিরাচরিত পঠন-পাঠনের সাথেই অ্যাপ মেকিং এর সিদ্ধান্ত নেয়। যার জন্য তার বাড়ির সদস্যদের সাথেই তার অংকের শিক্ষক বাসুদেব গোস্বামী সেইসব বিষয় নিয়ে পড়ার জন্য ও গবেষণা করার বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করে তাকে।

আর এরপরই ২০১৮ সালে অঞ্জলি বর্মন তার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পূর্ণ করেই, এ সকল বিষয়ে বিশেষ পঠন-পাঠনের জন্য ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে পড়া শুরু করে। আর তা করতে গিয়ে দীর্ঘ একটা সময় ধরে ব্যাঙ্গালোরে একটি টিম তৈরি করে , সে এক বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ে রিসার্চ করে, এমা চ্যাট নামের একটি অ্যাপ তৈরি করে ফেলে। যেখানে সে তার টিমের সাহায্যে টিম লিডার হয়ে, উন্নত সব দেশগুলির বিশাল সংখ্যক মানুষজনকে তার অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের সহযোগিতা কোরে, সেই সকল যুগলদের মনে বিশেষ স্থান করে নেওয়াই তার অ্যাপ সম্পর্কে স্ট্যান্ড ফোর্ড ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ আকর্ষিত হয়ে, ওই ছাত্রীকে আগামীতে এই সকল বিষয়ে আরো বেশি গবেষণা করার জন্য, তাকে তিন বছর ধরে এক্সিকিউটিভ এডুকেশন বিষয়ক গবেষণার জন্য সুযোগ করে দিল, নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই ওই ছাত্রী এই অ্যাপ তৈরি করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বিশ্বের দরবারে। বিশেষ করে প্রেমিক যুগল ও দম্পতিদের যে দূরত্ব, কর্ম ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে সেই দূরত্বকে এই অ্যাপের মাধ্যমে কাটিয়ে তোলার জন্য বেশ কিছু সংযোগের ব্যবস্থা গ্রহণ করে সে হয়ে উঠেছে অনেকের কাছেই বিশেষ গ্রহণযোগ্য।

ইতিমধ্যেই সে প্রায় পাঁচ লক্ষ উপভোক্তার কাছে এই বিশেষ পরিষেবা পৌঁছে তাদের মন জয় করে নিয়েছে। আগামীতে স্ট্যান্ড ফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে সে তার অ্যাপকে আরও বেশি উন্নত প্রযুক্তির দিয়ে আরো বেশি মানুষজনকে সংযুক্ত করে এই অ্যাপকে উন্নততর করে তুলবে বলেই আশাবাদী ওই ছাত্রী। এর মধ্যেই ওই ছাত্রী প্রায় ৩০ জন সদস্যকে একটি বড় অংকের প্যাকেজ দিয়ে তার অ্যাপটি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। শনিবারই ওই ছাত্রীর কাছে ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য ভিসাও পাঠিয়েছে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৭ শে জুন সে রওনা দিচ্ছে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায়। ছাত্রীর আশা আগামীতে সে এই অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের এক অনন্য নজির গড়ে তুলবে।

Leave a Reply